সবজি কিনতেও হিসাব করতে হচ্ছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ৬:৪২ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
কাঁচাবাজারগুলোতে শীতের আগাম সবজি উঠলেও অতিরিক্ত দামে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষজন। কারণ হিসেবে বিক্রেতারা অবরোধের অজুহাত সামনে আনছেন। পণ্য আনতে অতিরিক্ত খরচ লেগেছে এমন দাবি তুলে গত সপ্তাহের চেয়ে প্রায় প্রতিটি সবজিতেই চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দাম চাইছেন তারা। তাতে শীতের সবজির স্বাদ নেওয়া থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে অনেক ক্রেতাকে।
মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিমবাজার ও টিসি মার্কেটের কাঁচাবাজার এবং বাইরের খুচরা দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, করলা, বেগুন, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, কচুর লতি, ঢেঁড়শ, লাউশাক, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, কচু শাকসহ সবধরনের শাক-সবজিতে বাজার ভরপুর। তবে কোনো সবজির দামই গত সপ্তাহের জায়গায় নেই।
এসব সবজির অধিকাংশটির দামই শুরু হচ্ছে ৭০, ৮০ ও ৯০ টাকায়। সর্বোচ্চ দাম হাঁকা হচ্ছে শিম, গাজর, বেগুনের। আকার ও মানভেদে ১৬০ টাকা পর্যন্ত দাম চাওয়া হচ্ছে প্রতি কেজি শিম। তাছাড়া নতুন ফুলকপি পিস ১০০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বেগুন জাতভেদে ৭০-১৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। পিছিয়ে নেই শসা, গাজরের দামও। দেশি শসা ৮০-৯০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০-৭০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা ও বরবটি ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, দেশি আদা ২২০ টাকা, দেশি রসুন ২২০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৭০-১৮০ টাকা এবং শুকনা লাল মরিচ ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শাকের বাজারও দামে পিছিয়ে নেই। লাউশাক, পালং শাক, লালশাক, কলমি শাক, কচু শাকসহ সবধরনের শাকের বাজারই চড়া। প্রতি আঁটি লাউ শাক ৬০-৭০ টাকা, পুঁই শাক ৫০-৫৫ টাকা এবং পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক ও কচু শাক ৩০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টিসি মার্কেটের কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী বকুল মিয়া বলেন, টমেটোর মৌসুম এখনও শুরু হয়নি। আগাম সবজি দাম তো একটু বেশিই পড়বে। তাছাড়া অবরোধের কারণে আড়তেই দাম দিতে হচ্ছে। তবে শীতের পুরো মৌসুম শুরু হলে দাম কিছুটা নাগালে আসবে।
ক্রেতা মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল বলেন, শাকসবজি এখন মধ্যবিত্তের পাত থেকে উঠে যাচ্ছে। বাড়তি দামের কারণে ভালো শাকসবজি কেনা সম্ভব হচ্ছে না। সবজি কিনতেও এখন খুব হিসাব করেই নিতে হচ্ছে। বাড়তি দামের লাগাম টানা না গেলে অবস্থা আরো শোচনীয় হবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসের ডাইনিং ম্যানেজার মামুন বলেন, কোনো সবজিতে তো হাতই দেওয়া যায় না। এতদিন তরকারি হিসেবে আলু ব্যবহার করলেও এখন দাম বাড়ার কারণে সেটি কেনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। একটা সবজিও কম দামে নেই। মানুষজন কি খাবে। শীতের পুরো মৌসুম শুরু না হলে এরকম অবস্থার পরিবর্তন হবে না।
স্বস্তির খবর নেই মুদিপণ্যেও। বুটের ডাল ১০০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৯০ টাকা, মসুর ডাল ভারতীয় ১২০ টাকা, দেশি ডাল ১৪০ টাকা, ছোলা ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও খোলা চিনিগুড়া চাল ১৪৫ টাকা, মিনিকেট চাল মানভেদে ৮০,৭০, ৬০, টাকা, বই নাজিরশাইল চাল ৭৫-৮০ টাকা, চিনি ১৫০ টাকা, গুঁড়াদুধ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে সয়াবিন তেল প্রতি লিটারের দাম পড়ছে ১৭০ টাকা। রুপচাঁদা ব্র্যান্ডের ৫ কেজির সয়াবিন তেলের বোতলের দাম হয়েছে ৮০০ টাকা এবং পামঅয়েল বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা কেজি দরে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের মনিটরিং আছে। তারপরও এখনকার পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা যাতায়াত খরচ বেশি দেখাচ্ছে। তবুও আগামীকাল আবার বাজার মনিটরিং করা হবে।