কুলাউড়ায় নলকূপ দেওয়ার কথা বলে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিলেন ইউপি সদস্য
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৫:৪৬ অপরাহ্ণ
কুলাউড়া প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফজলু মিয়ার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৮নং ওয়ার্ডের সাদিপুর গ্রামের ভুক্তভোগী দুই মহিলা। ওই ইউপি সদস্য সরকারি গভীর নলকূপ দেওয়ার নাম করে তাদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী পরিবারের মো. ফারুক মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে সাদিপুর গ্রামের মৃত সোহাগ মিয়ার স্ত্রী শামসুন নাহার ও মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী আতিকুর রহমানের স্ত্রী সুমা বেগম বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের সময় ওই মেম্বার আমাদের বাড়ীতে ভোট চাইতে যান। তিনি ওয়াদা করেছিলেন নির্বাচিত হলে আমাদেরকে সরকারি গভীর নলকূপ দিবেন। নির্বাচিত হওয়ার পর তার সাথে অনেকবার যোগাযোগ করেছি। তাছাড়া এমপি মহোদয় ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে গভীর নলকূপের জন্য আবেদন করেও পাইনি। একপর্যায়ে ফজলু মেম্বার আমাদের বাড়ীতে গিয়ে দুটি সরকারি নলকূপ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এর বিনিময়ে তাকে ৮০ হাজার টাকা করে দেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু আমরা ৮০ হাজার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ওই মেম্বার ৬০ হাজার টাকা করে দিতে বলেন। পরে কয়েক ধাপে ওই টাকা তিনি আমাদের কাছ থেকে নেন।
ভুক্তভোগীরা আরো বলেন, আমাদেরকে ৭শ’ ফুট করে পাইপ, সাবমারসিবল পাম্প ও ১ হাজার লিটারের ট্যাংকি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ৪শ’ ফুট পাইপ স্থাপনের কিছু কাজ করিয়ে দেন। নলকূপের অন্যান্য মালামাল দেননি। এমনকি তার সাথে যোগাযোগ করলে অন্যান্য মালামাল আমাদেরকে ক্রয় করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এমতাবস্থায় আমরা পানির পাম্প, ট্যাংকি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করে নলকূপের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করেছি। আর নলকূপের কাজ ঠিকাদার নুরুল ইসলাম ও মিস্ত্রি বাদশা মিয়া করেছেন বলেও তারা জানান। তাছাড়া এলাকায় তদন্ত করলে ওই মেম্বারের বিরুদ্ধে এরকম আরও অভিযোগ উঠে আসবে বলেও তারা দাবী করেন।
ভুক্তভোগী মহিলারা জানান, এ বিষয়ে গত রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তারা পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৭ সেপ্টেম্বর ইউএনও কার্যালয়ে শুনানি হয়েছে। কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যায় অভিযুক্ত ফজলু মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ফেসবুক লাইভে করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, বর্তমানে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আমরা ইউপি সদস্যের এসব কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই এবং প্রশাসনের মাধ্যমে টাকা ফেরত চাই।
অভিযুক্ত মেম্বার ফজলু মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি শামসুন নাহারের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু সরকারি নলকূপ বাবত ৬০ হাজার টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এমনকি তার বিরুদ্ধে নিউজ করার ইচ্ছে থাকলে তার পরামর্শও দেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার জানান, ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষকে নিয়ে শুনানি হয়েছে। উভয়পক্ষের লিখিত বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।