আবারো রাজকান্দি বনে আগুন, তদন্তে কমিটি গঠন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ৮:২৫ অপরাহ্ণ
বুধবার (২৬ এপ্রিল) মৌলভীবাজারের রাজকান্দি বন রেঞ্জের কুরমা বন বিটের সুনারায় এলাকায় বাঁশবাগানে আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে সিলেট বন বিভাগ। সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রেঞ্জ অফিসারকে প্রধান করে একটি কমিটি করেছে সিলেট বন বিভাগ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোনো পর্যটক সিগারেট খেয়ে শুকনো পাতার মধ্যে ফেলে দিলে সেখান থেকে আগুন লাগতে পারে। তবে, আগুন লাগার সঠিক কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
হামহাম জলপ্রপাত ঘুরতে যাওয়া পর্যটক সালিক মিয়া জানান, হামহাম যাওয়া-আসার পথে বনের প্রচুর জায়গা জুড়ে আগুন লেগেছে। আগুনের প্রচুর উত্তাপ ছিলো। রাস্তা দিয়ে আসা যাচ্ছিল না। আগুন নেভানোর পর সন্ধ্যার পরে বন থেকে বেরিয়ে আসি। আগুনে অনেক গাছের গুড়া (মোথা) পুড়ে গেছে।
হামহাম জলপ্রপাত ঘুরতে যাওয়া একজন পর্যটক প্রথমে ফেসবুকে এ তথ্য জানান। তার তথ্যমতে, হামহাম জলপ্রপাত যাওয়া-আসার পথে বনের প্রচুর জায়গাজুড়ে আগুন লেগেছে। আগুনের ব্যাপক উত্তাপ থাকায় রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করাও দায় হয়ে পড়েছে।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয়রা জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তারা আগুন লাগার সাথে জড়িত। তারা চুরদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে গিয়ে তারাই আগুন লাগায়। যাতে করে বনের গাছ সহজে বন থেকে বের করে নিয়ে বিক্রি করা যায়।
কুরমা বন বিট কর্মকর্তা বিপ্লব হোসেন বলেন, সোমবার বিকালে হামহাম জলপ্রপাতে যাওয়ার সড়কের বাঁশ বাগানে আগুন লাগার খবর পাই। খবর পেয়ে বন কর্মী ও স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় আগুণ নিয়ন্ত্রনে আনা হয়। আগুনে লেলিহান শিখায় বনের প্রায় দুই/আড়াই একর এলাকার লতাগুল্ম জাতীয় গাছ জ্বলসে গেছে। এখন ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা হয়নি। আগুন লাগার কারন হিসাবে তিনি ধারনা পোষন করে বলেন, এই পথ দিয়ে যাওয়া বা আসার সময় কোন পর্যটকের ছোড়ে ফেলা সিগারেটের আগুন থেকে বনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটতে পারে।
মৌলভীবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক মারুফ হোসেন বলেন, আমরা কমলগঞ্জ থানায় জিডি করেছি। সেখানে উল্লেখ করেছি, আগুনে প্রায় ২.৩৪ একর বাঁশমহাল পুড়ে গেছে। সোমবার বিকেলে হামহাম জলপ্রপাতে যাওয়ার সড়কের বাঁশবাগানে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে বেশ কিছু বাঁশ পুড়ে গেছে।
কমলগঞ্জ বন রেঞ্জ কর্মকর্তা তৈহিদুল ইসলাম বাঁশ বনে আগুন লাগার কথা স্বীকার করে বলেন, আগুনে বনের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। কিছু পাতা ও লতাগুল্ম জাতীয় গাছ জ্বলসে গেছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও মৌলভীবাজারে বড়লেখার লাটিটিলা বিট, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া বনে আগুন লাগে। গত ১৫ মার্চ রাজকান্দি বনের সাঙ্গাইসাফি, কাঁঠালকান্দি ও বাঘাছড়া এলাকার তিনটি টিলাভূমি আগুনে পুড়ে যায়।