পূর্বদিকে সংবাদ প্রকাশ
সেই নব দম্পতিকে বাড়ি ফেরালো পুলিশ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মার্চ ২০২৩, ৯:৩১ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
সমাজপতিদের বাঁধায় ঘর ছাড়া হওয়া সেই নব দম্পতি অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন। মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের প্রচেষ্টা ওই নব দম্পতিকে অবশেষে মেনে নিয়েছেন সমাজপতিরা।
বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের একটি দল তাদের বাড়ি পৌঁছে দেয়া। এর আগে ওই নব দম্পতি মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেন। পুলিশ সুপার সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মৎসজীবি পরিবারের ছেলে ও বাঙালি মেয়ের বিয়ে হওয়ায় নব বিবাহিত দম্পতিকে ঘরে তুলতে পারছিল না ছেলের পরিবার। সামাজিক প্রথা অনুযায়ী সেই বিয়েকে অস্বীকার করে স্থানীয় সমাজপতি ও গ্ৰামের মোড়লরা। বিষয়টি নিয়ে গত ২৭ মার্চ “সমাজপতিরা বিয়ে না মানায় বাড়ি ছাড়া এক দম্পতি” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় পূর্বদিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে।এরপরই এই ঘটনা সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আপার কাগাবালা ইউনিয়নের উত্তর কাগাবলা গ্রামের ইমন মিয়ার সাথে গত ১৯ মার্চ সাতবাক গ্রামের পলি আক্তারের বিয়ে হয়। ধর্মীয় বিধান মেনে চার লক্ষ টাকা কাবিন নির্ধারণ করে নিকাহনামা রেজিষ্টারের মাধ্যমে তাদের বিয়ে সম্পূর্ণ হয়। বিয়ের কথা এলাকায় জানা জানি হওয়ার পর বাঁধা হয়ে দাড়ান স্থানীয় মুরব্বিরা। তাদের দাবি প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী মৎস্যজীবী পরিবারের কারো সাথে বাঙালিদের বিয়ে মেনে নেয়া হয় না। গত ২৫ মার্চ পলি আক্তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এ বিষয়ে জানিয়ে পোস্ট দেয়ার পর আলোচনায় আসে বিষয়টি।
বাড়ি ফিরে নব দম্পতি পলি আক্তার ও ইমন মিয়া বলেন, সমাজপতিদের নির্যাতনের শিকার হয়ে ভয়ে আমরা আত্মগোপনে ছিলাম। আজ আমাদের সংসারে আমরা ফিরেছি। সমাজ আমাদেরকে মেনে নিয়েছে। আমি পুলিশ প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাদের কারণে আমরা নতুন জীবন ফিরে পেলাম।
আপার কাগাবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমন মোস্তফা বলেন, নব দম্পতিরা তাদের বাড়ি ফিরেছেন। গ্ৰামের সব পক্ষকে নিয়ে মডেল থানায় বসে বিষয়টি সমাধান করা হয়। সেখানে সবাই একমত হন যে, তাদের সংসারে কেউ বাঁধা দিতে পারবেন না। আমরা তাদের মেনে নিয়েছি।
মৌলভীবাজারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, সমাজের সবাই তাদের মেনে নিয়েছেন। বিষয়টির একটি সুন্দর সমাধান হয়েছে। যারকারণে নব দম্পতি বাড়ি ফিরতে পেরেছেন। আমাদের পুলিশের একটি টিম তাদেরকে বাড়িতে আজ পৌঁছে দিয়েছে।