বন ফায়ারের মধ্যদিয়ে শেষ হল কলকাতা সিলেট উৎসব
প্রকাশিত হয়েছে : ৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:০৯ অপরাহ্ণ
বিশেষ প্রতিনিধি::
দুইদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো “কলকাতা সিলেট উৎসব ২০২৩”। দক্ষিণ কলকাতা সিলেট অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে এবং অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ শ্রীহট্ট সম্মিলনীজ এর সহযোগিতায় দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্ক ক্লাবের দুর্গাপূজা প্রাঙ্গণে আয়োজন কর হয় এই উৎসব। ৭ ও ৮ জানুয়ারি দুইদিনব্যাপী এ বর্ণাঢ্য আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন কেপিসি গ্লোবাল গ্রুপ। ভারত, বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী সিলেটীরা এই উৎসবে অংশ গ্রহণ করেন।
শনিবার শীতের আমেজে আর বর্ণাঢ্য আয়োজনে দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্ক স্কুল প্রাঙ্গণে মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে সিলেট উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সুনামগঞ্জ-৫ আসনের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক। অপরদিকে রবিবার রাত ১১ টায় বন ফায়ারের মধ্যদিয়ে শেষ হয় এই প্রানের উৎসব।
অনুষ্ঠানমালায় উপস্থিত ছিলেন- কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, বাংলাদেশী প্রখ্যাত স্থপতি-লেখক-নাট্যকার-তথ্যচিত্র নির্মাতা-বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত শাকুর মজিদ, অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ শ্রীহট্ট সম্মিলনীজ এর সভাপতি শ্রীমতী কৃষ্ণা দাশ, সাধারণ সম্পাদক মলয় পুরোকায়স্থ, সাংবাদিক বিকচ চৌধুরী, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী উত্তরা চৌধুরী, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান আর.কে ধর, দক্ষিণ কলকাতা সিলেট এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা শ্রী নির্মল সেন চৌধুরী, সভাপতি প্রদোষ রঞ্জন দে, সাধারণ সম্পাদক বাপ্পু এন্দো, সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা দীপ্তা দে, জার্মানী প্রবাসী সাকি চৌধুরী সহ অনেকেই।
দুই দিনব্যাপী এই প্রানের উৎসবে ছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, মেলা, আলোচনা সভা, সেমিনার, বাংলাদেশ সন্ধ্যা, গুণীজন সংবর্ধনা, নির্মলেন্দু চৌধুরী ও অমর পালের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষ সেমিনার।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন বাংলাদেশ ও ভারতের প্রখ্যাত শিল্পীবৃন্দ। গান পরিবেশন করেন অলোক রায় চৌধুরী, লাভলী দেব, প্রাণেশ সোম, বাউলা দীপু, তুলিকা চৌধুরী, তপন রায়, রাজু চক্রবর্তী, সুরমা পিয়াসী’র মহাশ্বেতা বোস, শর্মিষ্ঠা রায়, অন্বেষা, শ্রীভূমির জবা দত্ত মন্ডল, অনামিকা দেব, মধুমিতা দাশগুপ্ত, শর্মিষ্ঠা রায়, অপর্ণা বণিক, দীপিকা সেন চৌধুরী, পাপিয়া রায়, রুমা দেব, শান্তা দেব, দোলা দাস পুরকায়স্থ, স্বরাজ ভট্টাচার্য্য, গৌতম চক্রবর্তী, সর্বাণী ভট্টাচার্য্য, দেবদাস চৌধুরী, কল্যাণী ধাম, মৈত্রেয়ী ধামসহ শ্রীভূমি, মাদল, পিয়াসী, করিমগঞ্জ শ্রীহট্ট সম্মিলনী ও শিলচর শ্রীহট্ট সম্মিলনীর শিল্পীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন শিলচরের রুপসা কর্মকার এবং শ্রীভূমির রত্নাদ্বীপা চৌধুরী, সুবর্ণিতা, শালিনী চৌধুরী, ঈশানী চৌধুরী, অন্বেষা দাস।
সন্ধ্যায় মীরাক্কেলের প্রথম বিজয়ী তপন দাসের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযোগীতা। প্রতিযোগীতায় উপস্থিত সকলের মাঝে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় বিভিন্ন কুইজের প্রশ্ন করা হয় এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরন করা হয়।
শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা নয় উৎসবে পাওয়া যায় সিলেটি রান্নার বিভিন্ন পদ আস্বাদ করার সুযোগ। এছাড়াও ছিলো সিলেটের ঐতিহ্যবাহি মনিপুরি তাঁত সহ নানা বস্ত্র ও পণ্য সামগ্রির কেনাকাটার সুযোগ। উৎসবের এই দুই দিন কলকাতার বুকে উঠে আসে মিনি সিলেট।
এ উৎসবে ভারত, বাংলাদেশ এবং বহির্বিশ্বে অবস্থানকারী বৃহত্তর সিলেটের অধিবাসীদের এক বিশাল মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উৎসবের ফলে প্রবাসী সিলেটি অধিবাসীগণ ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, তাছাড়াও সিলেটী জনগোষ্ঠীর সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, সামাজিক দায়িত্ববোধ, ঐক্য, ভ্রাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা দেশাত্ববোধ ও সহ অবস্থানের ভাব গড়ে উঠছে।
সিলেটের ভূমিপুত্র লোকসংগীতের প্রবাদপ্রতীম শিল্পী নির্মলেন্দু চৌধুরী এবং বাংলার সঙ্গীতগতের অন্যতম কিংবদন্তি লোকসঙ্গীতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান অমর পালের জন্মশতবর্ষকে উৎসর্গ করে কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয় সিলেট উৎসব ২০২৩। অনুষ্ঠানের সামগ্রিক পরিচালনায় ছিলেন দক্ষিণ কলকাতা সিলেট এসোসিয়েশনের সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা শ্রীমতী দীপ্তা দে।