নিহত চার স্বজনকে দাফন, এলাকায় শোকের মাতম
প্রকাশিত হয়েছে : ৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১১ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
হবিগঞ্জের মাধবপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বালুবোঝাই ট্রাক, মাইক্রোবাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে কুলাউড়ার প্রবাসী পরিবারের শিশুসহ নিহত ৫ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) আসরের জানাজা শেষে কুলাউড়া ও কমলগঞ্জে নিহতদের বাড়িতে তাদের দাফন করা হয়। বিষয়টি সময় নিশ্চিত করেছেন নিহতদের আত্মীয় আশরাফুল মামুন।
তিনি জানান, সকালে সাদিয়া (২১) ও শিশু হাবিবার (২) লাশ বাড়িতে এলে গোসল করিয়ে রাখা হয়। দাফনের জন্য অপেক্ষা করা হয় বাকি লাশগুলোর। দুপুরের পরে বাকি লাশগুলো এলে তাদেরকেও গোসল করিয়ে পরিষ্কার করা হয়।
তিনি আরও জানান, কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মাদানগর গ্রামে প্রবাসী রাজুর ছোটভাই সিহাবের (১৩) জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। একই উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের গাড়িচালক সাদিরের (৩২) লাশও তার এলাকায় জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
বাকি তিনটি লাশ কমলগঞ্জের ভেড়ারচর গ্রামে দাফন করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম (৩২), তার স্ত্রী সাদিয়া (২১) ও তাদের শিশুসন্তান হাবিবা (২)। তারা প্রবাসী রাজুর ভগ্নীপতি, বোন ও ভাগ্নি।
এর আগে, নিহতদের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তাদেরকে এক নজর দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করেন।
জানা যায়, মালয়েশিয়া প্রবাসী রাজুকে ঢাকা বিমানন্দর থেকে মাইক্রোবাসযোগে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বাড়িতে নিয়ে আসার সময় রাজু ও তার পরিবারের সদস্যরা মাধবপুরের নোয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে বিপরীতদিক থেকে আসা একটি বালুবোঝাই ট্রাকের সাথে তাদের মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। একই সময় দ্রুতগতির একটি পিকআপ ভ্যান মাইক্রোবাসের পেছন দিকে ধাক্কা দেয়।
ত্রিমুখী সংঘর্ষের এ দুর্ঘটনায় রাজুর পরিবারের চার সদস্য ও মাইক্রোবাস চালক নিহত হন। এ সময় রাজু ও তার পিতাসহ ৩ জন গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৩ জন। তারা হলেন প্রবাসী রাজু (২৯), তার পিতা নুরুল ইসলাম (৫০) ও চাচাতো ভাই নিশাত (১৮)।
দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম মিয়া বলেন, আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো থানায় আনা হয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতার আবেদন করলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। এ মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের মাতম ছড়িয়ে পড়ে। তাদের বাড়িতে জড়ো হতে থাকে এলাকার লোকজন। স্বজনদের আহাজাড়িতে শোকে নিঃস্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।