এবার সেই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৫ জানুয়ারি ২০২৩, ৬:৩১ অপরাহ্ণ
বিশেষ প্রতিবেদক::
প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দরিদ্র, অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা লাভের সহায়তা হিসেবে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রত্যেক প্রতিবন্ধী (বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন) শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক বরাদ্দ দিচ্ছে। কিন্তু মৌলভীবাজার সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে অধ্যায়নরত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের এ্যাসিসটিভ ডিভাইস কেনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোতাহার বিল্লাহ’র বিরুদ্ধে। যার ফলে সরকারের এই মহতি উদ্যোগ ভেহেস্তে গেছে। নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে কুমলমতি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা।
২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সুবিধাভোগী প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের তালিকা চাইলে হেডক্লার্ক মোহাম্মদ আলী তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি ওই প্রতিবেদককে বলেন, কিছু বিতরণ করা হয়েছে। বাকী গুলো খুব শীঘ্রই বিতরণ করা হবে। তবে একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, চলতি বছরের ৩ জানুয়ারী পর্যন্ত ৩টি হুইল চেয়ার ব্যতিত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের আর কিছুই দেয়া হয়নি।
অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সদর উপজেলায় ৫৬ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের এ্যাসিসটিভ ডিভাইস কেনার জন্য সরকারি বরাদ্দ আসে ৯০ হাজার টাকা। এই টাকা থেকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ১টা হুইল চেয়ার, ১টা চশমা, কানের যন্ত্র ও ঔষধ দেয়ার কথা রয়েছে।
সদর উপজেলায় কর্মরত একাধিক শিক্ষক বলেন, এ পর্যন্ত প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের সরঞ্জমাদি দেয়া হয়নি। তবে বুধবার উপজেলা অফিস থেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে প্রতিবন্ধিদের সরঞ্জমাদি নেয়ার জন্য। এতো দিন পরে কি কারণে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হল বুঝতে পারছি না।
বুরুতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমানের মাতা মনোয়ারা বেগম বলেন, স্কুল থেকে বলা হয়েছিল ২০২২ সালে আমার ছেলেকে একটি চমশা দেয়া হবে কিন্তু পাইনি। শাহবন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মাহিম এর পিতা শেফুল মিয়া বলেন, বিগত বছর আমার ছেলেকে প্রতিবন্ধীদের বরাদ্দের কিছুই দেয়া হয়নি। আগনসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী তানজুমা আক্তার এর মাতা আরিফা বেগম বলেন, এ পর্যন্ত আমরা কিছু পাইনি। এছাড়াও একাধিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সাথে কথা হলে একই কথা বলেন।
বুরুতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউল ইসলাম বলেন, “উপজেলা অফিস থেকে ফোন দিয়ে আজকে (বুধবার) প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সরঞ্জামাদি কিনার টাকা দেয়া হয়েছে”। পৌর শহরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “প্রতিবন্ধীরা টাকা পেয়েছে। তবে কবে টাকা পেয়েছেন এবিষয়ে তিনি মুখখোলতে নারাজ। কাজীর বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবায়দুল হক বলেন, “আমার বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীরা আজকে (বুধবার) টাকা পেয়েছে”।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোতাহার বিল্লাহ বলেন, “আমি বাহিরে আছি দুই দিন পর অফিসে আসেন বিস্তারিত কথা হবে”।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শামসুর রহমান বলেন, “আজকে দেয়া তো কোনো ভাবেই নিয়মের মধ্যে পড়ে না। এ সরঞ্জামাধি ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের মধ্যে দেয়ার কথা। নগদ টাকা দেয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। সরঞ্জামাধি কিনে দিবে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।