বন্যায় প্রশংসা কুড়ানো সেই তাসরিফ কুলাউড়ায় বিতর্কের মুখে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ২:২১ অপরাহ্ণ
বিশেষ প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এক পুনর্মিলনী উৎসবে এশার আজান এবং নামাজের সময় গান গেয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন জনপ্রিয় শিল্পী তাসরিফ খান এবং তার ব্যান্ড কুঁড়েঘর।
ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক এইচএসসি ২০১৯ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অবশ্য বলছেন, আজান-নামাজের সময় গান বন্ধই ছিল। অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকতে না পেরে অনেকে অনেক কথা ফেসবুকে লিখছেন।
রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) কুলাউড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে ওই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন তাসরিফ খান এবং তার ব্যান্ড কুঁড়েঘর।
এদিকে, ওই অনুষ্ঠানকে ঘিরে কুলাউড়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এশার আজানের সময় ও আজান পরবর্তী নামাজের সময় উচ্চশব্দে গান নিয়ে নেটিজেনরা রবিবার রাত থেকেই নানান মন্তব্য করছেন।
খোকন ভুঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, গার্লস স্কুলে রাতে প্রোগ্রাম হাস্যকর। মেয়েদের স্কুলের প্রোগ্রাম দিনেদিনে শেষ করা উচিৎ। ভালোদের খারাপ হতে এগিয়ে দিচ্ছি আমরা।
ফয়েজ উদ্দিন লিখেছেন, কুলাউড়ার মতো একটা ছোট্ট শহরে এতো গানের আয়োজন আগে কখনও দেখিনি। কুলাউড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে চলছে সন্ধ্যার পর থেকে জমজমাট গানবাজনা। এখন এশার আজান ও পরবর্তীতে এশারের নামাজ চলছে- তারপরও গান চলছে।
গফফার চৌধুরী নামে একজন লিখেন, উন্নয়নের রজতজয়ন্তী চলছে। ইমরান আহমদ নামে একজন লিখেন, ওয়াজ করতে গেলে থানা-উপজেলায় পারমিশন মেলে না। গানবাজনা করতে গেলে পারমিশন লাগে না। এমন স্মার্ট বাংলাদেশে বাস করি আমরা। এ রকম অসংখ্য মন্তব্য ফেসবুকে লিখছেন নেটিজেনরা।
জানা যায়, ২০১৭ সালে তাসরিফ খান ও তার সঙ্গে থাকা একদল গানপ্রিয় তরুণের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে কুঁড়েঘর। দেশে ও দেশের বাইরে অসংখ্য কনসার্টে দর্শকও মাতিয়েছেন তারা। গেল ভয়াবহ বন্যায় যখন সিলেটের জনজীবন বিপর্যস্ত। দিশেহারা যখন বন্যাদুর্গত মানুষ। ঠিক সেই মুহূর্তে বন্যার্তদের জন্য অর্থ সংগ্রহ ও বন্যা পরিস্থিতির খবর জানাতে ফেসবুক লাইভে এসে জনপ্রিয় হয়েছিলেন তরুণ এই গায়ক।
এইচএসসি ২০১৯ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও অনুষ্ঠানের আয়োজকদের মধ্যে সাকি ও সামিয়া জানান, আজান-নামাজের সময় গান বন্ধই ছিল। অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকতে না পেরে অনেকে অনেক কথা ফেসবুকে লিখছেন। এই অনুষ্ঠান আয়োজনের আগ থেকেই একটি গোষ্ঠী আমাদের অনুষ্ঠান বানচালের চেষ্টা চালায়। কোনো অপপ্রচারই আমাদের অনুষ্ঠান ঠেকাতে পারেনি।
তারা আরও জানান, এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে অনেক হুমকিধামকিও খেতে হয়েছে। অনেক ছেলেরা বলেছেন, অনুষ্ঠান উন্মুক্ত না করলে সমস্যা হবে। প্রমাণসহ তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবেন বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে একাধিক বার কুঁড়েঘর ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী তাসরিফ খানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, এ রকম কোনো অনুষ্ঠান করতে হলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট থেকে পারমিশন নিতে হয়। পারমিশনের কোনো কপি তার হাতে আসেনি বলেও জানান তিনি।