মৌলভীবাজার জুড়ে চোখ উঠা রোগের প্রকোপ, বাড়ছে দিন দিন
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ৭:০০ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক আল আমীন বলেন, কনজাংটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য রুমাল, তোয়ালে, বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে এতে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হয়।
তিনি বলেন, অপরিষ্কার বা নোংরা জীবনযাপন চোখ ওঠার অন্যতম কারণ। চোখ ওঠা রোগে চোখ লাল হয়ে যায়। আর এমনটি হয় এই কনজাঙ্কটিভার রক্তনালিগুলো প্রদাহর কারণে ফুলে বড় হয়ে যাওয়া এবং তাতে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে। ঘুম থেকে ওঠলে চোখ আঠা আঠা লাগা, সব সময় চোখের ভেতর কিছু একটা পড়েছে এমন অনুভূতি, চোখ চুলকানো এবং জ্বালাপোড়া করা, আলোর দিকে তাকালে অস্বস্তি লাগা, সবকিছু ঘোলা ঘোলা দেখা, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখের কোনায় ময়লা জমা, চোখ ফুলে যাওয়া চোখ ওঠার লক্ষণ। দৃষ্টি ঝাপসা হলে, চোখ খুব বেশি লাল হলে, খুব বেশি চুলকালে বা অতিরিক্ত ফুলে গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
বড়কাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র সামির আহমদ জামি বলেন, চার দিন আগে প্রথমে আমার চোখ উঠে। দুই দিন পরে আমার আপুরও চোখ উঠে। চোখ উঠার পর পরিবারের পক্ষ থেকেই আমাদেরকে স্কুলে যেতে নিষেধ করা হয়।
রায়পুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মাও. আবু জাফর সাদেক খান বলেন, প্রথমে আমি আক্রান্ত হই। এরপর পরিবারের অন্যরাও আক্রান্ত হন। যে সকল ছাত্রছাত্রীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদেরকে ক্লাসে না আসার জন্য বলা হচ্ছে।
জুড়ীর গোয়ালবাড়ির আবিদ হোসাইন বলেন, আমাদের বাড়ির এক শিশু আক্রান্ত হয়। তারপরই আমি আক্রান্ত হয়ে যাই। ফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ড্রপ ব্যবহার করেছি। এখন কমতে শুরু করেছে। আমাদের গ্রামেই প্রায় ১০ জনের মতো আক্রান্ত আছেন। একজনের কাছ থেকে আরেকজন আক্রান্ত হচ্ছেন।
মৌলভীবাজারের ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দীন মুর্শেদ বলেন, চোখ উঠা রোগকে আমরা ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস বলে থাকি। এটা সিজনাল একটি রোগ। গরমে এই রোগ বেশী হয়। ঋতু পরিবর্তনের ফলে এই ভাইরাল ইনফেকশন হচ্ছে। আক্রান্ত রোগী ঘরে থাকাটাই ভালো আর বাহিরে গেলে কালো চশমা ব্যবহার করতে হবে। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা সাপ্তাহ- দশ দিনেই সুস্থ হয়ে যাবেন। যাদের বেশি সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা চক্ষু হাসপাতাল এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাই সঠিক পরিসংখ্যানটা এখনই বলা যাচ্ছে না।