নামাজ পড়ার শর্তে অপরাধীকে মুক্তি দিলেন মৌলভীবাজারের আদালত
প্রকাশিত হয়েছে : ২ আগস্ট ২০২২, ৮:০২ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
নামাজ পড়া ও মাদক থেকে বিরত থাকাসহ নানা শর্তে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে সংশোধনের জন্য মুক্তি দিয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান এই ব্যতিক্রমী মানবিক রায় দিয়েছেন।
আদালত উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষ অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। বিভিন্ন কারণে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। ছোটখাটো অপরাধ হলে তাকে শাস্তি না দিয়ে সংশোধনের সুযোগ দেয়া উচিত। কারাগারের বাইরে রেখে সাজাপ্রাপ্তদের সংশোধনের সুযোগ দিতে দীর্ঘদিনের পুরোনো আইনটি সচল করা প্রয়োজন। বিশ্বের অনেক দেশে এমন আইন চালু রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিরাজনগরে মারামারির ঘটনা কেন্দ্র অভিযুক্ত নুর মিয়াসহ ৪ জনকে আসামী করে মাহমুদ মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযুক্ত নুর মিয়ার বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৩২৫ ধারার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাকে ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত। পরে অভিযুক্ত নুর মিয়ার দুইজন নাবালক সন্তান রয়েছে ও পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় আদালত। “প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্সের ১৯৬০” অধীনে নামাজ পড়া, ১শতটি গাছ রোপন, নতুন করে কোনো অপরাধে জড়িত না হওয়া, মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা, শান্তি রক্ষা ও সদাচরণ করা, আদালতের নির্দেশমত হাজির হওয়াসহ নানা শর্তে মুক্তি দেন আদালত। এই শর্তগুলো প্রতিপালনের জন্য জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা-কে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে আদালত কে অবহিত করবেন।
মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক পি.পি এ. এস. এম. আজাদুর রহমান বলেন, আদালতের এমন ব্যতিক্রমী রায় ইতিবাচক উল্লেখ করেছেন উপস্থিত আইনজীবী ও বিচারকরা। তাঁর প্র্যাকটিস জীবনে এ ধরণের ব্যতিক্রমী রায় দেখেন নাই যা অপরাধী সংশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদরুল হোসেন ইকবাল বলেন, সমাজে অপরাধ হ্রাসকল্পে এ ধরণের রায় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দেয়া উচিত।