আল ইসলাহ নেতা সাব্বির আহমদ এর নিমন্ত্রণে সিলেটে মতবিনিময়
প্রকাশিত হয়েছে : ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ৩:৪৬ অপরাহ্ণ
বিশেষ প্রতিবেদক::
সিলেটে সম্প্রীতির বীজ বপন হয়েছে হযরত শাহজালাল (রহ)’র মাধ্যমেই-‘আমরা সকল সিলেটী’, বাংলাদেশের বুকে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে- ‘সম্প্রীতির সিলেট’ এ অনুভূতি ও অতীত ঐতিহ্যকে লালন করে সিলেটের এক অভিজাত রেস্টুরেন্টে মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারী) ইউকে আল ইসলাহ নেতা হাফিজ সাব্বির আহমদ-এর নিমন্ত্রণে একে একে উপস্থিত হতে থাকেন সিলেটের প্রথিতযশা স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ সহ ইলেক্ট্রনিক্স, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সিলেটপ্রেমি সাংবাদিকবৃন্দ। কালামে পাক তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় সিলেট নিয়ে এক একান্ত অনুভূতি প্রকাশ, মতবিনিময় ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে সিলেটের সম্প্রীতির পুরনো ঐতিহ্য রক্ষা সহ দেশ-জাতি ও গোটা বিশ্ববাসীকে কোভিড-১৯ এর মতো ভয়াল গজব থেকে রক্ষার জন্যে রাব্বে কায়েনাত মহান আল্লাহর দরবারে এক আবেগঘন মোনাজাত পরিচালনা করেন, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতী একেএম মনোওর আলী।
এতে বিশেষ অনুভূতি প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জজকোর্টের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্জ মোঃ নাসিম হোসাইন।
বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ সিলেট মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহা. আজির উদ্দিন পাশা ও মাসিক (জাতীয়) পরওয়ানার সহকারী সম্পাদক মাওলানা আখতার হোসাইন জাহেদ এর যৌথ সঞ্চালনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে’র সেন্ট্রাল মেম্বার, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, সিলসিলা ইসলামিক সোসাইটি ও সিরাজামমুনিরা জামে মসজিদ এন্ড এডুকেশন সেন্টার ইউকে’র পরিচালক আলহাজ্জ হাফিজ সাব্বির আহমদ।
এতে একে একে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তুলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্জ শফিকুর রহমান চৌধুরী, আল ইসলাহ’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, দরগাহে হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (রহ.)-এর মোতাওয়াল্লী সৈয়দ খলিলুল্লাহ সালিক জুনায়েদ, সিলেট জেলা আল ইসলাহ সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর মোহাম্মদ নুমান, তালামীযে ইসলামিয়া’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ দুলাল আহমদ, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোজতাবা হাসান চৌধুরী নুমান, সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ এন্ড এডুকেশন সেন্টার ইউকে’র পরিচালক আলহাজ্জ কাজী নানু মিয়া, জেলা বিএনপি নেতা আবুল কাসেম, উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্জ মোঃ এমরান উদ্দিন ও বৃহত্তর টিলাগড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ছমর উদ্দিন মানিক।
‘সিলেট ও সিলেটী’ নিয়ে অনুভূতি প্রকাশে অ্যাডভোকেট মিসবাহ সিরাজ বলেন, রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো আমাদের এ পুণ্যভূমি সিলেট। এ সম্প্রীতির বীজ বপন করেছিলেন সূদুর ইয়েমেন থেকে এসে হযরত শাহজালাল (রহ.)। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের অগ্রজ পূর্বসূরিগণ হয়ে আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে এ বন্ধন। ভবিষ্যতেও সর্বক্ষেত্রে এ সম্প্রীতি বজায় থাকবে ইনশাআল্লাহ। ইউরোপ-আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে একখন্ড সিলেট রয়েছে। সেটা হয়েছে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা আমাদের সিলেটী প্রবাসী ভাইদের মাধ্যমে। আজকে হাফিজ সাব্বির আহমদ এর মতো মহান ব্যক্তিরা সুদূর লন্ডন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের প্রবাসী সন্তানদের সুরা, কুরআন, নামাজ ও আল্লাহর দ্বীনের সঠিক শিক্ষা প্রদান করছেন বিধায় ইউরোপিয়ান কালচারে থেকেও সেদেশের নতুন প্রজন্ম বিপথগামীতা থেকে রেহাই পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সাব্বির আহমদ গং এর লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.)’র সিলসিলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে, আমি ছোট্ট শিশুদের সহীহ সুরা-কেরাত পড়া শুনে খুবই অভিভূত হয়েছি। সেদেশের অমুসলিম ভাইয়েরাও এসব প্রতিষ্ঠান থেকে আলোর পথ খোঁজে পাচ্ছেন।
সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্জ মোঃ নাসিম হোসাইন বলেন, রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনসহ প্রায় সবকটি ক্ষেত্রেই সিলেটে সম্প্রীতির এক গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। বিপদেআপদে দলীয় ভেদাভেদ ভুলে একে-অপরের পাশা দাড়ানো আমাদের চিরাচরিত অভ্যেস। সিলেটে এরকম নজীর অনেক। এজন্য আমরা সিলেটী হিসেবে গর্বিত।
স্বাগত বক্তব্যে এ মিলনমেলার নিমন্ত্রক হাফিজ সাব্বির আহমদ বলেন, আমরা সিলেটী, দুনিয়ার যেখানেই যাই না কেনো আমরা সিলেটী হিসেবে গর্বিত। শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.)’সহ ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতিধন্য এ পূণ্যভূমির সন্তান আমরা। আমার মুর্শিদ হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.)-এর শিক্ষা ও দীক্ষা বুকে লালন করেই আমার পথচলা। হিংসা-বিদ্বেষের পরিবেশ পরিহার করে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশকেও এগিয়ে নিতে হবে আমাদেরকে।
গেল সপ্তাহে সংক্ষিপ্ত এক সাংগঠনিক সফরে দেশে আসেন আলহাজ্জ হাফিজ সাব্বির আহমদ। দেশ-দেশের মানুষ নিয়ে ভাবেন ভিনদেশে থেকেও। বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজারে জন্ম হিসেবে তিনি সিলেটী পরিচয়ে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন সুদূর বিলেতেও। মৌলভীবাজারে তার প্রতিষ্ঠিত স্কুল-মাদরাসার পাশাপাশি নিজস্ব প্রেস হতে তারই প্রকাশিত “সাপ্তাহিক পূর্বদিক” পত্রিকাটি বেশ সুনামের সহিত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছে। প্রবাসজীবনের পূর্বে দেশের ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের বেশ দাপটে ছাত্রনেতা ছিলেন, ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শবাহী কাফেলা বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের আহ্বায়কেরও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিভাগের সকল দলমতের মানুষের সাথে সখ্যতা ছাত্রনেতা থেকেই। বিলেত গিয়েও জনাব সাব্বির বসে থাকেননি কেবলমাত্র নিজ কর্মযজ্ঞে, সাংগঠনিক দায়-দায়িত্বের পাশাপাশি একই মন-মানসিকতা সম্পন্ন স্বল্প সংখ্যক আল্লাহর রাহে নিবেদিত অকুতোভয় সৈনিকদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন মসজিদ-মাদরাসা সহ দ্বীনি মারকাজ “ফুলতলী ইসলামিক সেন্টার কভেন্ট্রি, সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ এন্ড এডুকেশন সেন্টার ইউকে। দেশে আসলেই খোঁজে বেড়ান সিলেটী গুণীজনদের। আস্ত একজন সিলেটপ্রেমি মানুষ হাফিজ সাব্বির আহমদ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আল ইসলাহ’র কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, বিশিষ্ট ট্রাভেলস্ ব্যবসায়ী মাওলানা খাজা মঈনউদ্দীন জালালাবাদী, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফিজ মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, বিশিষ্ট শিল্পপতি মোঃ লাভলু মিয়া, সিলেট মহানগর আল ইসলাহ’র সহ-সাধারন সম্পাদক মাওলানা ফয়জুল হক, প্রচার সম্পাদক হাফিজ সাদ উদ্দিন, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ উসমান গণি, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক আব্দুল জলিল প্রমূখ।