কনকপুর কামালপুর নাজিরাবাদে স্বতন্ত্রদের মাঠ সরগম
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারে ভোটের মাঠে এখনো কয়েকটি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরগম রয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান এবং নতুন প্রার্থী রয়েছেন। সদর উপজেলায় সরকারী দলের উপযুক্ত প্রার্থী না থাকায় এঅবস্থা তৈরী হয়েছে বলে ভোটাররা মনে করছেন। তবে এপরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে দলটি। কিন্তু সময় কম থাকায় সেটা সম্ভব নিয়ে শংকা রয়েছে। প্রতিদিনই সরকারি দলের জেলা নের্তৃবৃন্দ সভা সমাবেশ করে ভোটারদের পক্ষে টানতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর মাত্র তিনদিন বাকী আছে। এরমধ্যেই শেষ হবে সব হিসেব নিকেশ।
কনকপুর ইউনিয়নে রেজাউর রহমান চৌধুরী বর্তমান চেয়ারম্যান থাকায় তাঁর একটা ভোট ব্যাংক রয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি ভোটের মাঠে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। কারণ তিনি গতবার স্বতন্ত্র থেকেই নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই নির্বাচনে নতুন প্রার্থীদেরকে শুণ্য থেকে শুরু করতে হবে আর পুরনো প্রার্থীরা এই ইউনিয়নে অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও চমক দেখালে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবেনা।
কামালপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ফয়ছল আহমদ। তিনি বিএনপি স্বতন্ত্র প্রার্থী। এপর্যন্ত তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এবার তাঁর ভোট ব্যাংকের উপর দাঁড়িয়েই নির্বাচন করছেন। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় তরুণ প্রার্থী আব্দুর রহমান ও আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আপ্পান আলী রয়েছেন। আব্দুর রহমান ও বিদ্রোহী প্রার্থী আপ্পান আলী একে অপরের ভোট কাটবেন। এই প্রেক্ষাপটে এবারও ফয়ছল আহমদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাজিরাবাদ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হক রাজা। তিনি বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। এপর্যন্ত একবার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এবার তাঁর ভোট ব্যাংকের উপর দাঁড়িয়েই নির্বাচন করছেন। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় নতুন প্রার্থী মো. আশিকুর রহমান। এছাড়া মোহাম্মদ মোস্তাহিদ আলী (স্বতন্ত্র), মো. মাহমুদুর রহমান(স্বতন্ত্র), সৈয়দ মুহিত আলী (স্বতন্ত্র), আশরাফ উদ্দিন আহমদ (স্বতন্ত্র) প্রার্থী আছেন। তারা একে অপরের ভোট কাটবেন। এই প্রেক্ষাপটে এবারও রাজা বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া সদর উপজেলার আপার কাগাবলা ইউনিয়নে এবার একজন ছাড়া সব নতুন প্রার্থী। এই ইউনিয়নে ইমন মোস্তফা (স্বতন্ত্র)), মো. আব্দুল মতিন (স্বতন্ত্র) এর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলে জানা গেছে। গিয়াসনগর ইউনিয়নে খুবই সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী জিলা মিয়া। তিনি সাবেক চেয়ারম্যান মনর মিয়ার ছেলে। লোকমুখে শোনা যাচ্ছে তাঁর বাবার ক্লিণ ইমেজ ও ভোটারদের সাথে তাঁর আচার ব্যবহারের কারণে তিনি অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ছুরুক মিয়া ও সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার ছেলে গোলাম মোশাররফ টিটু। আমতৈল ইউনিয়নে সুজিত দাশ এবার ভালো অবস্থানে রয়েছেন বলে সুর উঠেছে। তিনিও এই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। এই ইউনিয়নে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বিএনপি স্বতন্ত্র প্রার্থী রানা খাঁন শাহীন ও সুজিত দাশের মধ্যে। রানা খাঁন শাহীন বর্তমান চেয়ারম্যান এবং সুজিত দাশ সাবেক চেয়ারম্যান। ইউনিয়নের ভোটারদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, গত নির্বাচনে সামান্য ভোটের কারণে সুজিত দাশ পরাজিত হয়েছিলেন। তবে এবার তিনি ভোটারদের মন জয় করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছেন। এছাড়াও তিনি আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় তাঁর আলাদা কদর রয়েছে ভোটারদের মাঝে। খলিলপুর ইউনিয়নে আবু মিয়া চৌধুরী (স্বতন্ত্র) এগিয়ে রয়েছেন।
ভোটের আর দুইদিন বাকী। এই তিনদিনে অনেককিছুরই পরিবর্তন হয়। তবে ভোটের আগের দিন যিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতায় থাকেন তাঁর বিজয় হয়। এটা অবশ্য ভোটের মাঠের বিগত দিনের চিত্র। এবার সেই চিত্র থাকবে না নতুন কোন চিত্রায়ণ হবে তা দেখতে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে শেষ কথা হলো, যা রটে তাঁর কিছু না কিছু বটে।