এস এম জাকিরের ‘ওপেন চ্যালেঞ্জ’
প্রকাশিত হয়েছে : ৪ ডিসেম্বর ২০২১, ৮:২৫ অপরাহ্ণ
ওমর ফারুক নাঈম::
এবার সমালোচনাকারীদের ওপেন চ্যালেঞ্জ করলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধরণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অধিকাংশ চেয়ারম্যান পদে হেরেছেন আওয়ামীলীগের মনোনিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা। এনিয়ে গত দুই দিন ধরে চলছে চরম উত্তেজনা। পরিবেশমন্ত্রীর অনুসারীরা বলছেন বিদ্রোহী প্রার্থীদের জয়ের পিছনে রয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনের ইন্ধন।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাতে ফেইসবুক লাইভে এসে সমালোচনাকারীদের ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন।
ফেইসবুক লাইভে এসে তিনি বলেন, গতকাল আমি একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে বড়লেখা যাই। আমি জানতাম না সেখানে সদর ইউনিয়নের যে প্রার্থী নৌকার বিপক্ষে ছিলেন তিনি আমার আত্মীয় হন। সেখানে দেখা হওয়ার পর তারা ছবি তুলেছেন। গত উপজেলা নির্বাচনে যিনি নৌকার বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তারই ভাই বর্তমানে ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকা নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। যিনি আমার বিরুদ্ধে মিছিল দিয়েছেন তিনি গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিপক্ষের প্রার্থীর প্রধান এজেন্ট ছিলেন। তিনি মিছিল দিয়ে বলেছেন, আমি নাকি যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তাদের ইন্ধন দিয়েছি। টাকা পয়সার লেনদেন হয়েছে।
এস এম জাকির বলেন, ছালেহ আহমদ জুয়েল যদি কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে অর্থ লেনদেনের একটি প্রমান দিতে পারেন, আমি আর বড়লেখাবাসীর সামনে আসবো না রাজনীতিও করবো না। যদি একটি প্রমাণ দিতে পারেন। আপনাদের সামনে রেখে আমি ছালেহ আহমদ জুয়েলকে চ্যালেঞ্জ দিলাম। বড়লেখাসহ সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে টাকা দিয়ে জাকিরকে কেনা যায় না। টাকার কাছে জাকির বিক্রি হয় না, এবং কেনাও সম্ভব না।
তিনি লাইভে আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম তিনি সেটা প্রমাণ করুন। না হয় আমি বড়রেলা জুড়ী বাসীর কাছে বিচার দিলাম, আপনারাই বলুন সেটার কি বিচার হওয়া উচিত। তিনি যদি সেটা প্রমাণ করতে না পারেন, আপনারাই সেটার বিচার করবেন। আমি নির্বাচনে নৌকার জন্য কাজ করেছি, নিয়মিত সব প্রার্থীর সাথে কথা হয়েছে। নির্বাচনের পরও কয়েকজন জয়ী প্রার্থীর সাথে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছি। নৌকার প্রার্থীদের সাথে আমার সম্পর্কের ঘাটতি নেই। কিন্তু সালেহ আহমদ জুয়েল ও সুয়েব আহমেদ একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের ছবি দেখে হুঠটাঠ করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমে গেলেন। আমি এটি একটি ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। বড়লেখাবাসী আপনারা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদ ও তাদের পক্ষে প্রচারণা এবং নির্বাচনের পর ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করার অভিযোগ তুলে শুক্রবার (০৩ ডিসেম্বর) রাত নয়টায় বড়লেখা পৌরসভা হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে এস এম জাকিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এর আগে রাত সাড়ে আটটায় জাকির হোসাইনের বিরুদ্ধে বড়লেখায় মিছিল করেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সমর্থকরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বড়লেখা সদর ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ছালেহ আহমদ জুয়েল। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে বড়লেখা উপজেলার ১০ ইউপির মধ্যে ৫টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। বাকি ৫টিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হেরেছেন। ওই ইউনিয়নগুলোতে নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে এসএম জাকির হোসাইন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কিছু সংখ্যাক বিএনপি-জামায়াত অনুসারীদের নিয়ে কাজ করেছেন। যার কারণে ওই ইউয়িনগুলোতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন।