কমলগঞ্জের ব্যবসায়ী নাজমুল হত্যার প্রধান আসামী গ্রেফতার
বদলা নিতে তিন মাস আগ থেকে নজরদারি করে নাজমুলকে হত্যা
প্রকাশিত হয়েছে : ৪ নভেম্বর ২০২১, ৩:১৫ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের চৈত্রঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানকে তিন মাস আগ থেকে নজরদারি করে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জাকারিয়া।
তিনি বলেন, প্রধান আসামি তফাজ্জুল আলী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা তাদের জানিয়েছে। তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ বি এম মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে রাজধানীর কমলাপুর থেকে তাকে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
এসপি জানান, তফাজ্জুল আলীর ওই সহযোগীর নাম খালেদ মিয়া। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুবাই যাওয়ার টিকিট, পাসপোর্ট, মোবাইল, সিম ও দেশি-বিদেশি টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ নিয়ে এজাহারভুক্ত ৩ আসামিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলো জানিয়ে এসপি বলেন, এই মামলায় জুয়েল মিয়া ও আমির হোসেন নামে দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জুয়েলের সঙ্গে যুবলীগ নেতা নাজমুলের বিরোধ ছিল। ২০২০ সালে নাজমুলের হামলায় তিনি পঙ্গু হয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাজমুল হত্যার একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ মঙ্গলবার ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, কালো একটি মাইক্রোবাসে করে এসে ৯ ব্যক্তি নাজমুলকে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে নিজের বাড়ির সামনে এসে মাটিতে পড়ে যান তিনি। এই সুযোগে নাজমুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে যায় ওই ৯ জন। সিসিটিভি ক্যামেরাটি নাজমুলের অফিসে লাগানো ছিল।
রোববার দুপুর ২টার দিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত নাজমুলের মৃত্যু হয় সিলেটের একটি হাসপাতালে সন্ধ্যা ৭টার দিকে।
মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভে নাজমুল জানিয়েছিলেন, হামলাকারীদের মধ্যে চারজনকে চিনতে পেরেছেন। তারা হলেন স্থানীয় তোফায়েল, রাসেল, মাসুদ ও তোফাজ্জল।
এ সময় তিনি দাবি করেন, ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে লড়তে চাওয়ায় তার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। মৃত্যু হলে খুনিদের যেন সাজা হয়, সেই আহ্বানও জানিয়েছিলেন নাজমুল।
নাজমুলের মৃত্যুর পর তার বড় ভাই শামছুল হক সোমবার তোফাজ্জলকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১৮-১৯ জনের নামে মামলা করেন।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ‘মামলায় প্রধান আসামি তোফাজ্জলকে করা হলেও প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে জুয়েল মূল পরিকল্পনাকারী। এলাকার আধিপত্য ও বালু মহাল নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হয়েছেন নাজমুল।’
নাজমুলের বিরুদ্ধে থানায় ১৫টি মামলা ছিল জানিয়ে ওসি জানান, ফুটেজ দেখে বাকি আসামিদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।