ছাত্রশিবিরের মাদ্রাসা সভাপতি ও সেক্রেটারিকে গ্রেফতারে নিন্দা ও প্রতিবাদ, মুক্তির দাবি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ৬:৩৭ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মৌলভীবাজার জেলা আমীর মোঃ আব্দুল মান্নান ও জেলা সেক্রেটারি মোঃ শাহেদ আলী এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মৌলভীবাজার শহর শাখার মাদ্রাসার সভাপতি সাব্বির ইসলাম তানভির ও সেক্রেটারি কুতুব উদ্দিন মোঃ বখতিয়ারকে অত্যন্ত শান্ত পরিবেশে জুমার নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে আটক করার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ও অবিলম্বে তাদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে জেলা নেতৃবৃন্দ বলেন, মৌলভীবাজার জেলার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য হলো সকল দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বিরাজমান। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের গ্রেফতার করে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তাদেরকে দুষ্কৃতিকারী হিসেবে উপস্থাপনা নজিরবিহীন। ইসলামের বিধি-বিধান মেনে চলে সুন্নতি লেবাস পরিধানকারী মাদ্রাসার ছাত্রদের এভাবে উপস্থাপন করলে সকল ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত লাগা স্বাভাবিক।
জেলা জামায়াত নেতৃবৃন্দ, কোরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্যকে জিহাদি বই হিসেবে আখ্যায়িত করলে নতুন প্রজন্ম ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। জেলা জামায়াত নেতৃবৃন্দ সকল অপপ্রচার বন্ধ করে নিরীহ মাদ্রাসা ছাত্রদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছেন।
এছাড়া আরো দুটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মৌলভীবাজার শহর শিবিরের প্রচার সম্পাদক জানান, পবিত্র জুম্মার নামাজ আদায় করে বাসায় ফেরার পথে রাস্তা থেকে মেধাবী দুই মাদ্রাসা ছাত্রকে তুলে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভূল তথ্য উপস্থাপন করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মৌলভীবাজার শহর শাখা।
১৬ অক্টোবর, শনিবার মৌলভীবাজার শহর শাখার সভাপতি আব্দুল বাছিত ও সেক্রেটারী আশরাফুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে পুলিশ ছাত্রশিবিরের মাদ্রাসা শাখার সভাপতি সাব্বির ইসলাম তানভির ও সেক্রেটারী কুতুব উদ্দিন মো. বখতিয়ারের বিরুদ্ধে থানায় কোন প্রকার অভিযোগ না থাকা সত্তে¡ও গ্রেফতার করে একদিন হাজতে আটক রাখা হয়। পরদিন সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তাদের সম্পর্কে ভূল তথ্য উপস্থাপনা করা হয়। যা খুবই কষ্টদায়ক।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির একটি গতিশীল সংগঠন। ইসলামের আহবান জানাতে গিয়ে আল-কোরআন, আল-হাদিস ও ইসলামী বই পুস্তক অধ্যয়ন ও বিতরণ করা নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। এটাকে ভিন্নখাতে উপস্থাপনা করা খুবই দু:খজনক। আমরা বিবেকবান দেশবাসীর কাছে প্রকৃত ঘটনা জানার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আটককৃতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার্থী। ভর্তিচ্ছুক মাদ্রাসার নিরিহ এই ছাত্রদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহবান জানাচ্ছি।
সকালের পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ডিবি পুলিশ ছাত্রশিবিরের কর্মী উত্তর মুলাইম মাদ্রাসার ছাত্র তানভির আহমদ ও টাউন কামিল মাদ্রাসার ছাত্র কুতুব উদ্দিনকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আটক করে। পরবর্তিতে তাদের আবাসস্থল শহরের সুলতানপুর এলাকায় নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। সেখানে তারা দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতেন। পুলিশ সেই বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের মাদ্রাসার কোরআন ও হাদিসের বইসহ মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তক জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মাদ্রাসায় লেখা পড়া করা ছাত্রদের বাসায় কোরআন, হাদিস ও বিভিন্ন ইসলামী বই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পুলিশ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাহিত করতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে জিহাদী বই উদ্ধার করেছে বলে মিথ্যাচার চালাচ্ছে। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদেরও তাদের সাথে দেখা করতে দিচ্ছে না। পুলিশের এমন দায়িত্বহীন ও পূর্ব পরিকল্পিত কর্মকাÐে মৌলভীবাজার শহরের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আতঙ্কিত। আমরা এই নিন্দনীয় ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বের মাদ্রাসা ছাত্রদের নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে।