নারী নেতৃবৃন্দের সাথে অপরাজিতাদের মতবিনিময়
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ৫:২৯ অপরাহ্ণ
বিশেষ প্রতিনিধি::
শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নারী নেতৃবৃন্দের সাথে অপরাজিতাদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর ২০২১) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার কৃষি অফিসের হলরুমে অপরাজিতা’র নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ওয়াচ, রূপান্তর, খান ফাউন্ডেশন ও প্রিপ ট্রাস্টের যৌথ ব্যবস্থাপনায় কালীঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ববিতা তাঁতীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অপরাজিতা প্রকল্পের জেলা কো-অর্ডিনেটর মর্জিনা আক্তারের উপস্থাপনায় ও উপজেলা কো-অর্ডিনেটর তাহমিনা পারভীনের সহযোগিতায় এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আমিরুজ্জামান, তৃণমূল নারী উদ্দোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস)-এর মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা তাহমিনা বেগম, মহিলা আওয়ামী লীগের উপজেলা শাখার সহসভাপতি হাজেরা খাতুন, বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদের শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিতালী দাশ, নারী মুক্তি সংসদের শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সহসভাপতি খোদেজা বিবি, মহিলা আওয়ামী লীগের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও তৃণমূল নারী উদ্দোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস)-এর সদস্য রিনা সরকার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কমরেড জলি পাল, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি মৌ দেব ও সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াসা ঘোষ, কমিউনিস্ট পার্টির নারী সেলের সদস্য বিউটি আক্তার, আওয়ামী লীগের সদস্য এলিনা রহমান কাকলীসহ অন্যান্যরা।
সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো আমাদের সংবিধানেও নারীর অধিকার নিয়ে স্পষ্ট বলা আছে। সংবিধানের বেশ কয়েকটি অনুচ্ছেদে অত্যন্ত সুনিপুণ ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে নারীর অধিকারগুলো। যা তাদের আপন সত্ত্বাকে উদ্ভাসিত, গৌরবান্বিত ও মহিমান্বিত করেছে। আমাদের সংবিধান দিয়েছে নারীর অধিকারের প্রতি এক অসাধারণ স্বীকৃতি। সাংবিধানিকভাবে নারী-পুরুষে বৈষম্য করার কোনও সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন যদি না হয় তাহলে অনেক ক্ষেত্রে ক্ষমতায়ন হলেও তার কাঙ্খিত ফল আমরা দেখতে পাবো না৷ আমি মনে করি, রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন অনেক বড় বিষয়৷ এটা চর্চার মাধ্যমে আসতে হবে৷ সেটার জন্য চর্চার ক্ষেত্রটা তৈরি করতে হবে আমাদেরকে৷ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন হচ্ছে একটি রাজনৈতিক বিশ্বাস। এই দৃষ্ঠিভঙ্গী থেকে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সৈয়দা তাহমিনা বেগম বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, শ্রমের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে। এতে মানুষ হিসেবে নারীরও মর্যাদা নিশ্চিত হবে। নারী হিসেবে আমরা করুণা চাই না। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন মানে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়তা বা অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্র পুরোপুরি বিকশিত হয়না। অনেক কথা বলার থাকলেও, সরাসরি কিছু সুপারিশ করছি, ১. রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়াতে সম্মানী ভাতা চালু করতে হবে। ২. রাজনৈতিক দলসমূহের কেন্দ্রীয় পর্যায়সহ সকল পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩% পদ নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক করতে হবে।
অপরাজিতা প্রকল্পের জেলা কো-অর্ডিনেটর মর্জিনা আক্তার ও উপজেলা কো-অর্ডিনেটর তাহমিনা পারভীন জানান, নারী জনপ্রতিনিধিরা শুধু নারীদের নয়, প্রতিনিধিত্ব করেন পুরুষ সমাজেরও। সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে নারী-পুরুষের সমানধিকার তথা ন্যায্য সুযোগ সুবিধা লাভের দিকনির্দেশনার আলোকে এ যাবত বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা কৌশল ও পরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বেশকিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যারমধ্যে ১৯৯১’র সংসদ নির্বাচনের পরে নির্বাচন কমিশনের জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী প্রথমবারের মতো দলীয় রাজনীতিতে সকল কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে শতকরা ৩০ ভাগ নারীর জন্য সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণের একটি বড় সুযোগ তৈরী হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোতে জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়ে সভাপতি বা সম্পাদক পদে নারীদের নির্বাচিত হতে দেখা যায় না। এ বিষয়ে নারীদের কি করণীয় তা আলোচনা করাটা খুবই জরুরী। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোতে যে নারীরা রয়েছেন তাদের চ্যালেঞ্জগুলো শুনা এবং সে অনুযায়ী এগুনোটা এখন সময়ের দাবী।