বসতঘরে হামলা ও গবাদি পশু লুটপাটে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ।। চা শ্রমিক পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুন ২০২১, ৫:৩০ অপরাহ্ণ
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ::
কমলগঞ্জে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় বসতঘর ভাংচুর, গরু-ছাগল, দোকানের ক্যাশ ও দান বাক্স লুটের ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে নির্যাতিত চা শ্রমিক পরিবারের। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কমলগঞ্জ ইউনিটের শমশেরনগরস্থ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। উপজেলার আলীনগর এর ফাঁড়ি সুনছড়া চা-বাগানে চা শ্রমিকের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
লিখিত বক্তব্যে কাজল হাজরা বলেন, বাগান কর্তৃপক্ষ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হাত থেকে শ্রমিকদের রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেননি। উপরন্তু বহিরাগতদের দ্বারা বাংলোর ফুলের টব ভাংচুরের ঘটনায় হরিনারায়ন হাজরা ও তার ভাইসহ চা শ্রমিক স্বপন নায়েক, মিলন নায়েকসহ ৭ জনের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হরিনারায়ন হাজরা, স্বপন নায়েক, মিলন নায়েক ও রাজকুমার ভূইয়া-এই ৪ জন শ্রমিককে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করেছে। লুটপাটকৃত গবাদি পশু উদ্ধারে পৃথক মামলা দেয়ার পরও পুলিশ আমাদের গরু উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। চা-বাগানে অনেক বেকার শ্রমিক থাকার পরও ম্যানেজার তাঁর পছন্দের বহিরাগত ৮জনকে বাগানে চৌকিদারের কাজে নিয়োগ করেছেন। বাগান কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম, চা পাতা ও ছায়াবৃক্ষ চুরি, শ্রমিকদের বিভিন্ন অধিকার নিয়ে কথা বলার কারণে নিরীহ শ্রমিকদের উপর অমানবিক অত্যাচার চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাড়িঘরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে জখম ও লুটপাটের ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দেয়ার পর আজ পর্যন্ত লুটপাটকৃত গবাদি পশু ও অর্থ উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবত বাগানের প্ল্যান্টেশন থেকে কাঁচা পাতা ও ছায়াবৃক্ষ চুরি করছিল। এই চক্রের সাথে বাগান কর্তৃপক্ষেরও অশুভ আঁতাত রয়েছে। ২৮ মে বিকেলে চা-বাগানের ১০ নম্বর সেকশনের প্ল্যান্টেশন থেকে কাঁচা পাতা চুরি করতে দেখে বাগানের হেড ক্লার্ক গোপাল চক্রবর্তীকে অবগত করলে তিনি শ্রমিকের নাম চোরদের জানিয়ে দেন। টিলাগাঁও গ্রামের মঈনুল আহমেদসহ চোরদল রাতে চা-বাগান বাজারে চা-শ্রমিক হরিনারায়ন হাজরা ও স্বপন নায়েককে বেঁধে নির্যাতন করে। এরপর মঈনুল আহমদের নেতৃত্বে ওই চোরদল বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম ও অকেনকে আহত করে। এসময় ৭টি গরু, ৫টি ছাগল, পাশে দোকানের ক্যাশ থেকে ৩০ হাজার টাকা ও একটি দান বাক্স লুট করে নিয়ে যায়।
এসময় নির্যাতিত হরিনারায়ন হাজরা, রাজকুমারী হাজরা, সুমিত্রা নায়েক, ম্বপন নায়েক, কানাই লাল হাজরাসহ চা শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে আলীনগর চা বাগান ব্যবস্থাপক হাবিব আহমদ চৌধুরী বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে গরু উদ্ধারের বিষয়টি দেখার জন্য বলেছিলাম। চেয়ারম্যান সাহেব নির্যাতিত শ্রমিকদের আসতে বললে তারা আসেনি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে থানার উপ-পরিদর্শক মহাদেব বাচাল জানান, হাতে কাগজপত্র সম্প্রতি পেয়েছি। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।