রাজনগরে ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৩
আসামীদের স্বীকারোক্তি ।। প্রথমবার ব্যর্থ হয়ে দ্বিতীয়বারে খুন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মার্চ ২০২১, ৭:২৫ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার, রাজনগর ::
রাজনগরে ব্যবসায়ীকে হত্যার পর তার কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাইর ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে রাজনগর থানার পুলিশ। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিক্সা (মৌলভীবাজার থ ১২-০১৬৫) ও ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। পাওনা টাকা নিয়ে ব্যবসায়ীর সাথে গ্রেফতারকৃত একজনের পূর্ববিরোধের জেরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আসামীরা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন- উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামের মৃত জসিম মিয়ার ছেলে রিয়াদ মিয়া (২৪), সদর ইউনিয়নের উত্তর ঘরগাঁও গ্রামের রনজিত দেবের ছেলে রবেন্দ্র দেব (৩৬), উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে জয়নাল আবেদীন (২৮)।
পুলিশ জানায়, শ্রীমঙ্গল শহরের সেন্ট্রাল রোডের ব্যবসায়ী লক্ষণ পাল প্রতি শুক্রবার রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করতে যান। তার সাথে পাওনা টাকা নিয়ে রাজনগর ইউনিয়নের উত্তর ঘরগাঁও গ্রামের রনজিত দেবের ছেলে রবেন্দ্র দেবের (৩৬) পূর্ববিরোধ ছিল। এরপর থেকে লক্ষণ পালকে হত্যা করতে রবেন্দ্র দেব স্থানীয় বেশ কয়েকজনের সাথে পরিকল্পনা করে। রবেন্দ্র এই হত্যাকান্ডে সহযোগিদের ৪ লক্ষ টাকা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে লক্ষণ পালের কাছে থাকা নগদ টাকা লুট করার পরিকল্পনা করে গ্রেফতারকৃত আসামীসহ কয়েকজনকে প্রলোভন দেখান।
পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা গত ৫ মার্চ লক্ষণ পালকে হত্যা করতে প্রথমবার চেষ্টা চালায়। তবে তারা সফল হতে পারেনি। গত ১২ মার্চ শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাঁচগাঁও ইউনিয়নের আজাদের বাজারে পাওনা আদায় করার সময় হত্যাকা-ে সহযোগী ৫ জনকে লক্ষণকে দেখিয়ে দিয়ে রবেন্দ্র দেব সেখান থেকে সরে পড়ে। পরে তাদের ৩ জন একটি সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে মৌলভীবাজার যাওয়ার জন্য গাড়ির অপেক্ষায় থাকা লক্ষণ পালের সামনে এলে তিনি তাতে উঠে পড়েন। পথে কমলারানীর দীঘির উত্তর পাশ থেকে আরো সহযোগী ২ জন গাড়িতে উঠার পর মাঝ রাস্তায় পৌঁছালে তারা লক্ষণকে চেপে ধরে টাকা ও মালামাল ছিনিয়ে নিতে চায়। তাতে বাঁধা দিলে তারা তাকে শ্বাসরোধ করে ও উরুতে ধারালো ছুরি চালিয়ে হত্যা করে। পরে মৃতদেহ উপজেলার সদর ইউনিয়নের পার্শ্বিপাড়া এলাকায় রাজনগর-কর্ণিগ্রাম সড়কের উপর ফেলে রেখে লক্ষণের সাথে থাকা নগদ ৫৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে তারা কমলগঞ্জ উপজেলা ঘুরে মৌলভীবাজার শহরে পালিয়ে যায়।
রাত ১২ টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে নিহতের স্বজনরা থানায় গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। এঘটনায় রাজনগর থানায় মামলা হলে পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য তদন্তের পাশাপাশি সোর্স নিয়োগ করে। গত ১৬ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে এঘটনায় জড়িত ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হাসিম বলেন, আমরা বিভিন্ন মোটিভ সামনে রেখে ঘটনার তদন্ত করি। পাশাপাশি সোর্স নিয়োগ করে ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে আটক করি। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকা-ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।