কুলাউড়ায় ‘স্কোয়াশ’ চাষ করে চমক দেখালেন কৃষক সাদিক
প্রকাশিত হয়েছে : ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ৫:২৩ অপরাহ্ণ
নাজমুল ইসলাম, কুলাউড়া ::
কুলাউড়ায় বিদেশি জাতীয় সবজি ‘স্কোয়াশ’ চাষ করে চমক দেখিয়েছেন কৃষক সাদিক মিয়া। নিজের ফলানো সবজি বিক্রি করে তিনি আজ অনেকটা স্বাবলম্বী। বিদেশি সবজি চাষে তার এই সফলতা দেখে গ্রামের অনেকেই হতবাক। তবে এই বিদেশী সবজি চাষ করতে স্থানীয় অনেকেই এখন আগ্রহী হয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের পশ্চিম খাদিমপাড়া গ্রামের সাদিক মিয়া প্রাইভেট একটি চাকুরি করেন। সেই চাকুরির বেতন দিয়ে তার নুন আনতে পান্তা ফুরায়। অভাব আর দেন-ধারে পরিবার নিয়ে অনেকটা হতাশায় ভুগছিলেন তিনি।
গত দু’মাস আগে স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে উপজেলায় এসে কৃষি কর্মকর্তাকে সবজি চাষের আগ্রহ দেখান।
এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মোমিন তাকে নতুন জাতের বিদেশী সবজি স্কোয়াশ চাষ করার পরামর্শ দেন এবং সাধ্যনুযায়ী সহযোগীতা করার আশ^াস করেন। নতুন জাতের বিদেশী সবজি শুনে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেন সাদিক মিয়া। অনেকটা ধার-দেনা করে নিজের ৯০ শতক জমিতে শুরু করেন স্কোয়াশ চাষ। কৃষি অফিসের নিয়মানুসারে চাষ করায় মাত্র আড়াই মাসে স্কোয়াশের বাম্পার ফলন পেয়েছেন তিনি। আর এই বাম্পার ফলনে সাদিকের চোখে-মুখে এখন তৃপ্তির হাসি।
কৃষক সাদিক মিয়া বলেন, কুলাউড়া কৃষি অফিসের মাধ্যমে এই সবজির বিষয়ে জানতে পেরে আগ্রহী হয়ে উঠি। কৃষি কর্মকর্তার আন্তরিক সহযোগিতায় ৫০-৬০ হাজার টাকা খরছ করে ৯০ শতক জমিতে প্রায় আড়াই হাজার স্কোয়াশ চারা রোপন করি। প্রতিটি গাছেই ৫-১০ টি পর্যন্ত ফল এসেছে এবং একেকটি স্কোয়াশের ওজন এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক ব্যবসায়ীরা এই সবজী নিতে আগে থেকেই যোগাযোগ রাখছেন তাতে এই মৌসুমে স্কোয়াশগুলো বিক্রি করে আড়াই থেকে ৩ লক্ষ টাকা পাবো বলে আশা করছি। সাদিক মিয়া আরও বলেন, এই ফলটি খেতে খুব সু-স্বাধু। অনেকটা মিষ্টি কুমড়ার মতো। বর্তমানে এলাকার অনেকেই এসে এটি সম্পর্কে জেনে নিচ্ছেন এবং স্কোয়াশ চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন জানান, স্কোয়াশ বিদেশি সবজি হলেও আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় এর চাষাবাদ এখন হচ্ছে। সাধারণত দোআঁশ মাটিতে এর ফলন ভালো হয়। স্কোয়াশ ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ এবং আয়রনসহ বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা একটি সবজি। কুলাউড়ায় পরীক্ষামূলক চাষে বেশ সফল হয়েছেন কৃষক সাদিক মিয়া। তাছাড়া এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করে খরছ বাদে ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব হয়। অপরদিকে এক বিঘা জমিতে স্কোয়াশ চাষ করে সব খরছ বাদে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।