মৌলভীবাজারে মাঠজুড়ে আমনের সোনা রঙ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ নভেম্বর ২০২০, ২:২৯ অপরাহ্ণ
অশোক কুমার দাশ ::
হেমন্তের মৃদু বাতাসে গাছের ডগায় ডগায় দোল খাচ্ছে কাঁচা-পাকা আমন ধান। বিস্তৃত মাঠজুড়ে এখন ধানের সোনা রঙ ছড়িয়ে পড়ছে। মৌলভীবাজার জেলার মাঠে মাঠে এবার আমনের বাম্পার ফলন দেখে কৃষকদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে ধান কাটাও শুরু হয়েছে। তবে দু-চার দিনের মধ্যেই পুরোদ্যোমে ঘরে ফসল তোলার কাজ শুরু হবে এমনটা আশা স্থানীয় কৃষকদের।
স্থানীয় কৃষক, কৃষি বিভাগ ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি থাকা সত্বেও চাষাবাদে প্রকৃতির অনুকূল অবস্থান, কৃষকের আগ্রহ ও উদ্যম এবং সরকারি সহায়তায় এবার সারা জেলায় আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এবার সারা জেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ২শ ৮০ হেক্টর বেশী পরিমাণ জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সারা জেলায় ১ লাখ ২০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও চাষ করায় সারা জেলায় চাষাবাদ হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৪ শ ৮০ হেক্টর। এদিকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৮ শ ২ মেট্রিক টন।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাওয়াদিঘী হাওর এলাকার বড়কাপন গ্রামের বাসিন্দা ও ইটা সমাজ কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রাজন আহমদ বলেন, এবার ৫ একর জমিতে চাষাবাদ করেছি। এবার বাম্পার ভালো ফলন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত ৩০ বছরের মধ্যে কাওয়াদিঘী হাওরে সর্বোচ্ছ আমন চাষাবাদ করা হয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকার ওমর ফারুক নাঈম বলেন, তাঁদের এলাকাসহ আশপাশ এলাকায় কৃষকদের মাঝে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। এখন ধান গড়ে তুলতেই ব্যস্ত সময় কাটতে কৃষকদের।
রাজনগর উপজেলার মহলাল গ্রামের আজাদ মিয়া, সুবিদপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়া, পশ্চিমভাগ গ্রামের সাছুল মিয়া, জিল্লুর রহমানসহ অনেকেই এবার ধানের ফলন ভালো উল্লেখ করে বলেন, সঠিক বাজারমূল্য পেলে তাঁরা লাভবান হবেন।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, চলতি মৌসুমে সময় মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানের জন্য আশির্বাদ হয়েছে। এছাড়া রোগ-বালাই ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় ধানের ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।