বড়লেখায় বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ অক্টোবর ২০২০, ৬:০৯ অপরাহ্ণ
বড়লেখা উপজেলার নারীশিক্ষা একাডেমি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা নতুন ভবন নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভবনের ছাদ চুইয়ে পড়ছে বৃষ্টির পানি। এছাড়া ভবনের ছাদের কয়েকটি স্থানে ফাটলও দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ ওঠেছে, কাজের শুরুতেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভবনটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, ঢালাই ও রুফ টাইলস স্থাপনের কাজ শেষে পানি চুঁইয়ে পড়ার বিষয়টি তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নজরে আনলেও তারা তা আমলে নেয়নি।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর প্রধান অতিথি হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ মো. শাহাব উদ্দিন বিদ্যালয় ভবনটির নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকায় নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স রুসমত আলম নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরুতেই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নানা অনিয়মের আশ্রয় নেয়। ভবনে নিম্নমানের রড ব্যবহার করতে চাইলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আপত্তির মুখে তা ফেরত নেয়। এছাড়া কয়েকবার নিম্নমানের কংক্রিটও বদলানো হয়েছে। এদিকে ভবনের ছাদ ঢালাই ও রুফ টাইলস স্থাপন কাজের ৬ মাসের মাথায় ভবনের চতুর্থ তলার ছাদের বিভিন্ন স্থান চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ঠিকাদারকে জানালেও তারা তা আমলে নেয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নারীশিক্ষা একাডেমি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা নতুন ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চতুর্থ তলার ভবনের বারান্দাসহ প্রতিটি কক্ষের বিভিন্ন স্থানে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ার চিহ্ন রয়েছে। পানি পড়ার জায়গাগুলো স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। ছাদের ভেতরের দিকে কিছু জায়গায় ফাটল ছিল। সেগুলো যাতে দেখা না যায়, সেজন্য সিমেন্ট দিয়ে আস্তর করে দেওয়া হয়েছে।
নারীশিক্ষা একাডেমি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ভবনের কাজে ঠিকাদার নিম্নমানের রড নিয়ে আসলে আমরা আপত্তি করায় তা একবার সরিয়ে নেন। নিম্নমানের কংক্রিটও ব্যবহার করেন। আপত্তির মুখে কিছু সরিয়ে নেন ঠিকাদারের লোকজন। ছাদ ঢালাই ও টাইলস ফিটিং এর পর ছাদ চুইয়ে পানি পড়তে থাকে। ঢালাই শেষ হওয়ার প্রায় ৬ মাস হয়েছে। এখন বৃষ্টি দিলেই পানি চুইয়ে পড়ছে। পানি পড়ার চিহ্ন দেখলে স্পষ্ট বুঝা যায়। বিষয়টি আমরা ঠিকাদারকে জানালেও এটা ঠিক হয়ে যাবে বলে সংশোধন করেননি।’
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক রুসমত আলম বিকেলে বলেন, ‘ভবনে কি সমস্যা হয়েছে তা আমি দেখিনি। কাজ করলে কিছু ভুল হয়ে যায়। তারপরও যদি সমস্যা দেখা দেয়, তা ঠিক করে দেব।’
এ ব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, ‘ঢালাইয়ের আগে রডসহ সব কিছু চেক করে দেওয়া হয়েছে। ঢালাইয়ের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু পানি চুইয়ে পড়েছে এটা আমাকে প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ অবগত করেনি। এরপরও যদি ত্রুটি ধরা পড়ে অবশ্যই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় কাজ সঠিকভাবে করে দিতে হবে। ত্রুটিগুলো সংশোধন না করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পরবর্তী কোনো রকম বিল দেব না।’