মনু নদীর ভাঙন রক্ষা প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০২০, ৩:৪০ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার ::
৯৯৬ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মৌলভীবাজারের মনু নদী ভাঙন রক্ষা প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)।
আজ ২১ জুন রবিবার সকালে একনেক সভায় ’মনু নদীর ভাঙন থেকে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা প্রকল্প” নামের প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী। আগামী শূষ্ক মৌসুমে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
মনু নদের বন্যা জেলার কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার জন্য একটি স্থায়ী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই এই তিনটি উপজেলার কোথাও না কোথাও মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে কমবেশি বন্যা নিয়ম হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফসল, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ মূল্যবান নানা স্থাপনা। বারবার বন্যার ছোবলে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে নদের দুই পাশের অনেক পরিবার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রাণকেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত মনু নদ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়েছে। ১৬৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মনু নদের ৯৩ কিলোমিটার পড়েছে ভারত অংশে। বাংলাদেশে ৭৩ কিলোমিটার। জেলার কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের তেলিবিল এলাকা দিয়ে মনু নদ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এরপর কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি কুশিয়ারা নদীতে গিয়ে মিশেছে।
মনু নদের বাংলাদেশ অংশের উভয় তীরে ১৪০ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। অনেক সময় বাংলাদেশ অংশে ভারী বর্ষণ না হলেও উজানে ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলে বেশি বৃষ্টিপাত হলে নদটি দ্রুত ফুলে–ফেঁপে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে নদটি ভরাট হওয়ার কারণে উজান থেকে দ্রুত নেমে আসা পানি ধারণ করতে পারে না। তখন নদের দুই পারের কোথাও না কোথাও বাঁধ উপচে বা বাঁধ ভেঙে বন্যা হচ্ছে। এতে মানুষের ফসলের পাশাপাশি ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও নানা রকম স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে প্রতিবছর রাস্তাঘাট নির্মাণে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। মনু নদীর ভাঙন থেকে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা প্রকল্প একনেকে পাসের অপেক্ষায় ছিল। সম্পূর্ণ সরকারি (জিওবি) অর্থায়নে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯৬ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা।
পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, মনুর দুই তীরের ৬৭টি স্থানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানে জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে অনেক ধরনের কাজ হবে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রকল্পটি অনুমোদন হয়েছে। আরো অনেক প্রক্রিয়া শেষে আগামী শূষ্ক মৌসুমে কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।