১০ টাকা মূল্যের চাল
রাজনগরে হতদরিদ্রদের চাল নিয়ে চালবাজি! কার্ড আটকে দেয়ার অভিযোগ ডিলারের বিরুদ্ধে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মার্চ ২০২০, ৩:৫২ অপরাহ্ণ
রাজনগর প্রতিনিধি ::
রাজনগরে হতদরিদ্রদের চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ডিলারের বিরুদ্ধে। উপকারভোগীদের চাল না দিয়ে হয়রানি ও তাদের কার্ড আটকে দিয়েছেন এক ডিলার। এদিকে বাইরে চাল বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ফতেহপুর ইউনিয়নের ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের ভুক্তভোগীরা।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের দেয়া ১০ টাকা মূল্যের ১৭.৮৮০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত ১০ মার্চ ওই চাল ডিলাররা গুদাম থেকে নিয়ে যান। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে খবর পেয়ে উপকারভোগীরা চাল নিতে স্থানীয় ডিলারের কাছে যান। ডিলার আজাদ মিয়া ৪ ও ৫ (আংশিক) নং ওয়ার্ডের উপকারভোগীদের চাল দিতে সময় ক্ষেপন করছেন। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন হতদরিদ্র উপকারভোগীরা। এছাড়াও কয়েকজনের কার্ড আটকে দিয়ে চাল না দেয়া ও হারিয়ে যাওয়া কার্ডের বদলে ৫০০ টাকা নিয়েও কার্ড দিচ্ছেন না ডিলার।
পশ্চিম বেড়কুড়ি গ্রামের ইজাজুন বেগম নামের এক উপকারভোগী জানান, কার্ড হারিয়ে গেলে নতুন কার্ড দিবেন বলে ওই ডিলার তার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেন। কিন্তু কার্ড দেননি। একই এলাকার ভুক্তভোগী সাজনা বেগম বলেন, কার্ড নিয়ে চাল আনতে গেলে ডিলার আজাদ মিয়া জানান আমার কার্ডে ঝামেলা আছে। অনেক অনুরোধ করেও আমাকে চাল দেননি। উল্টো আমাকে ধমক দেন এবং কার্ড রেখে দেন। বেড়কুড়ি গ্রামের আরেক ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম বলেন, কার্ড হারিয়ে যাওয়ায় পর চাল নেয়ার জন্য চেয়ারম্যান একটি প্রত্যয়ন দেন। ওই প্রত্যয়ন দিয়ে চাল নিতে গেলে ডিলার আমাকে এটা দিয়ে চাল দিতে পারবেন না। আমাকে ধমকাধমকি করে প্রত্যয়নটি ছিঁড়ে ফেলতে চান। পরে চাল না পেলে আমার প্রত্যয়নটি ফিরিয়ে দিতে বললে তিনি আমাকে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে ৩টি তারিখ লিখে তারপাশে ৩টি টিপসই নেন। কিন্তু আমাকে ৩০ কেজি চাল দেন।
জাহানারা বেগম বলেন, চাল আনতে আমি কয়েকবার ডিলারের কাছে যাই। তিনি চাল দেননি। রবিবারে আবারো চাল আনতে বললে গিয়ে আনার পর মেপে দেখি ২৬ কেজি চাল আছে।
ইউপি সদস্য এমদাদুর রহমান টিটু বলেন, চাল দেওয়ার খবর পেয়ে অনেকেই গিয়েছিল। কিন্তু ডিলার আজাদ মিয়া চাল না দিয়ে পরের দিন নেয়ার জন্য বলেন, পরেরদিন গেলেও তিনি চাল দেননি। ১৯ জনের কার্ড আটকে দেন পরে কয়েকজনকে চাল দিলেও অন্যরা পায়নি।
চালের ডিলার আজাদ মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি সবাইকেই চাল দিয়েছি। যারা কার্ড হারিয়ে ফেলেছে তাদের কার্ড বানানোর জন্য ৫০০ টাকা দিয়েছে। আমি কারো কার্ড বা প্রত্যয়ন আটকাইনি।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুন নূর বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেয়া অভিযোগ আমার কাছে তদন্তের জন্য দেয়া হয়েছে। আমি অভিযোগকারী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলতে ওই এলাকায় যাচ্ছি।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ঊর্মি রায় বলেন, লিখিত অভিযোগ খাদ্য কর্মকর্তা তদন্ত করে রিপোর্ট দিবেন। সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।