কমলগঞ্জে খাসিয়া বর্ষ বিদায় উৎসব পালন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ২:৫১ অপরাহ্ণ
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ::
কমলগঞ্জে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে মাগুরছড়া ও লাউয়াছড়ায় দুটি পুঞ্জি খাসিয়া স¤প্রদায়ের বর্ষ হয়। খাসিয়াদের ভাষায় একে বলা হয় ‘খাসি সেঙ কুটস্যাম’। বর্ষ বিদায়ের এই চিরাচরিত ঐতিহ্যবাহী প্রথায় উদযাপন করেন খাসিয়ারা। খাসি সোসিয়্যাল কাউন্সিলের আয়োজনে ২৩ নভেম্বর শনিবার দিনব্যাপী মাগুরছড়া খাসিপুঞ্জি মাঠে এ উৎসব শুরু হয়।
খাসি সোসিয়্যাল কাউন্সিলের সভাপতি ও মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান জিডিসর প্রধান সুচিয়াং এর সভাপতিত্বে এবং লাউয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান ফিলা পত্মী, খাসি সোসিয়্যাল কাউন্সিলের সেক্রেটারী এলিসন সুঙ এর সঞ্চালনায় খাসি বর্ষ বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরীন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন স¤প্রীতি বাংলাদেশ এর আহবায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মল্লিকা দে, বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের চেয়ারপার্সন পিডিশন প্রধান সুচিয়াং, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সালেহ এলাহী কুটিসহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যানবৃন্দ।
লাউয়াছড়া মাঠের এক প্রান্তে বাঁশের খুঁটির উপর প্রাকৃতিক পরিবেশে নারিকেল গাছের পাতায় ছাউনি দিয়ে আলোচনা সভার মঞ্চ তৈরি করা হয়। মাঠের চারপাশে তাদের নিজস্ব পণ্য সামগ্রী নিয়ে মেলায় স্টল বসে। স্টলগুলোতে খাসিয়া স¤প্রদায়ের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়াও খেলনা, খাদ্য, পোশাক ও মশলা সামগ্রী স্থান পেয়েছে।
বৃহত্তর সিলেট বিভাগের ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জি থেকে আগত নারী-পুরুষ, শিশু কিশোররা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে এসে এসব স্টল থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনছেন।
উৎসবের ম‚ল আকর্ষণ ছিল ঐহিত্যবাহী খাসি পোশাক পরে মেয়েদের নাচ-গান, তৈল যুক্ত একটি বাঁশে উঠে উপরে রাখা মোবাইল ফোন গ্রহণ, দুটি পুকুরে বড়শী দিয়ে মাছ শিকার, তীর ধনুক খেলা, গুলতি চালানো, র্যাফেল ড্র ও মেলা। মাগুরছড়া ইয়‚থ ক্লাবের সভাপতি ফরলী মিয়াঙ, খাসি সোশাল কাউন্সিলের তথ্য সম্পাদক সাজু মারছিয়াঙ বলেন, এ উৎসবের মাধ্যমে তাদের বিলুপ্ত প্রায় সংস্কৃতি ও খেলাধ‚লাকে ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
২০১২ সাল থেকে মাগুরছড়া থাসিয়া পুঞ্জির ফুটবল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে খাসি বর্ষ বিদায় ‘খাসি সেঙ কুটস্যাম’ পালন করা হচ্ছে। ৭২টি খাসিয়া পুঞ্জির থেকে খাসি নারী পুরুষ, কিশোর- কিশোরীরা এ উৎসবে যোগ দিয়েছেন। আর এখানের সব আয়োজনই প্রাকৃতিক পরিবেশে হচ্ছে। অনুষ্ঠান চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।