আলোতে ভাসলো জলের গ্রাম অন্তেহরি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ৫:১০ অপরাহ্ণ
আব্দুর রহমান সোহেল, রাজনগর ::
হাওরের বুকে ভেসে থাকা গ্রাম অন্তেহরি। সূর্য ডুবার পরেই নেমে আসতো ঘন কালো অন্ধকার। জলজ উদ্ভিদে আঁধার ছিড়ে ভেসে আসতো রকমারী শব্দ। নেহাত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হতো না ঘর থেকে। বিদঘুটে আঁধারে ছেয়ে যেতো পুরো গ্রাম। কিন্তু ঘরের পাশেই ছিল আলোর ঝলকানি। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া করার ছিলনা কিছুই। তবুও আশায় ছিলেন একদিন আলো জ¦লবে তাদের ঘরেও। আশায় আশায় সময় গেল, দিন গেল, বছর গেল, চলে গেল কয়েক যুগ। অবশেষে তারা দেখা পেলেন সেই আলোর। চোখে মুখে হাসির ঝিলিক। আনন্দের ফোয়ারা। কাক্সিক্ষত বিদ্যুৎ পেল সেই অন্তেহরি ও মুজেফরপুরের সাড়ে ৫শ পরিবার।
রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের অন্তেহরি ও মুজেফরপুর গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। প্রায় ৪ যুগ আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাশিমপুর এলাকায় পাম্প হাউজ স্থাপন করে। পাম্প চালানোর জন্য মৌলভীবাজার সদর থেকে বিদ্যুৎ লাইন নেয়া হয় সেখানে। চোখের সমানে বিদ্যুৎ সুবিধা থাকলেও ওই এলাকার মানুষজন বিদ্যুৎ সুবিধা পাননি। বিগত জোট সরকারের সময় সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান উপজেলা সদর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে ফতেহপুর ইউনিয়নে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিলেও বঞ্ছিত থেকে যান ওই গ্রামগুলোর সাধারণ মানুষ। পরে দেয়া হবেÑ এমন আশ^াস দেয়া হলেও তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টার পর রাজনগরের অবহেলিত এ গ্রামে অবশেষে জললো আলো। অন্তেহরি ও মুজেফরপুর গ্রাম রাজনগর উপজেলার হলেও ওই দুই গ্রামের বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের আওতাধীন। এ দুই গ্রামে ৫২৯টি পরিবারকে বিদ্যুৎ দেয়া হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজনগর উপজেলা থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরে কাউয়াদীঘী হাওরের বুকে গড়ে ওঠা এ গ্রামে বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার-রাজনগর আসনের এমপি নেছার আহমদ।
ফতেহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিছবাহুর রহমান, পল্লী বিদ্যুতের জিএম শিবু লাল বসু, মনসুরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিলন বখত, ডিজিএম সুজিত কুমার বিশ^াস, আখাইলকুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম আহমদ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ময়নুল ইসলাম খান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ফৌজি প্রমুখ।