কুলাউড়ায় দেড় মাস থেকে কুনিমোড়া-তারাপাশা সড়ক বন্ধ, মন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষিত
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ৬:৫২ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার মনু নদীর তীরবর্তী হাজীপুর ইউনিয়নের নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে স্থানীয় কাউকাপন বাজার এলাকার কুনিমোড়া-তারাপাশা সড়ক ও কটারকোনা বাজার-হাজীপুর ইউপি কার্যালয়ের হাসিমপুর এলাকার পাকা সড়কের বিশাল অংশ তিন দফায় নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ এই আঞ্চলিক প্রধান সড়কে দেড় মাস ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকল্প সড়ক চালু না হওয়াতে এতদঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
জানা যায়, গত ৭ জুলাই থেকে লাগাতার বৃষ্টির কারণে মনু নদীর পানির স্রোতে কাউকাপন বাজার এলাকায় ভাঙণ শুরু হয়। এরপর ১ আগস্ট বড়ধরনের ভাঙণে কুনিমোড়া-তারাপাশা সড়ক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও কটারকোনা বাজার-হাজীপুর ইউপি কার্যালয়ের হাসিমপুর এলাকার পাকা সড়ক তিন দফা ভাঙ্গনের ফলে সড়ক বন্ধ হয়ে পড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ ড্রাইবেশন দিয়ে বিকল্প পথ তৈরি করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সড়কে যান চলাচল বন্ধের প্রায় দেড়মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত এ সড়ক সংস্কার করার কোন উদ্যোগ নেয়নি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এ দুটি সড়ক চালুর দাবি জানিয়ে ৫ আগস্ট স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের বরাবরে একটি লিখিত চিঠি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী প্রধান প্রকৌশলীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তুু মন্ত্রীর নির্দেশের ১ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও প্রধান প্রকৌশলী বা কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী এখন পর্যন্ত ভাঙ্গন কবলিত সড়কগুলো চালুর ব্যবস্থা করেনি।
এদিকে বিকল্প সড়ক চালুর দাবি জানিয়ে সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন। লিখিত আবেদন সূত্রে জানা গেছে, হাজীপুরের কুনিমোড়া-তারাপাশা সড়কের কাউকাপন বাজার অংশ ও কটারকোনা বাজার-হাজীপুর ইউপি কার্যালয় সড়ক মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের ওপর পড়েছে। দুটি সড়কই খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সড়ক দুটি নির্মাণ করেছে। দুটি সড়ক দিয়ে কুলাউড়াসহ আশপাশের রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কয়েক লক্ষাধিক লোক প্রয়োজনীয় কাজে প্রতিদিন চলাচল করেন। ওই দুটি সড়কের বিকল্প হিসেবে মনু নদী বাঁধ-ভুকলী-হাসিমপুর সড়ক এবং শহীদ আরজু মিয়া গেট-তারাপাশা সড়ক রয়েছে। ওই দুটি সড়ক দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে। তবে ভুকলী-হাসিমপুর সড়কের এক কিলোমিটার এবং শহীদ আরজু মিয়া সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা। তাই দুটি সড়কের দুই কিলোমিটার জায়গা পাকা করে দিলে লোকজনের চলাচলে দুভোর্গ লাগব হবে।
এ ব্যাপারে হাজিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের একজন মন্ত্রীর নির্দেশনা দেবার প্রায় ১ মাস হয়ে গেলেও প্রশাসন অথবা প্রকৌশল বিভাগ সড়ক যোগাযোগ চালু করেন নি। জনগণের প্রতি যদি প্রশাসনের কোন দায়বদ্ধতা থাকতো তাহলে মন্ত্রীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালিত হতো।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী মু. ইসতিয়াক হাসানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কুলাউড়া উপজেলা নবাগত নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় মুঠোফোনে জানান, আমি ১ সপ্তাহ হয়েছে এ উপজেলায় যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি কোন অবস্থায় রয়েছে তা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।