রাজনগরের ইটা চা বাগানে স্কুল ছাত্র আব্দুর রহিমের মৃত্যু, চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ৬:৩৯ অপরাহ্ণ
রাজনগর প্রতিনিধি ::
রাজনগরে ইটা চা বাগানে দশম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুর রহিমের মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে বিক্ষোভ ও ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছে বাগানের শ্রমিকেরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাগানের স্টোর এলাকায় প্রায় ১২শ শ্রমিক বিক্ষোভ করে এবং আব্দুর রহিম হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানায়। পরে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেয়। নিহতের পরিবারের দাবি, আব্দুর রহিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তার প্রেমিকের পরিবার এলাকা ছাড়ে পালিয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ইটা বাবাগানের আব্দুল আজিজের ছেলে করিমপুর খলাগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র আব্দুর রহিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই বাগানের ৫নং সেকশনের মাসুদ মিয়ার মেয়ে ইয়াছমিন আক্তারের সঙ্গে। ইয়াছমিন আক্তারও একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী। এই সুবাদে উভয়ের মধ্যে বেশ কিছু দিন থেকে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। গত ১৫-১৬ দিন আগে উভয়ের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে বিরোধ দেখা দিয়েছিল। পরে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়। এসময় ইয়াছমিনের পরিবার হুমকি দিয়ে বলেছিল তাদের বাড়িরে আশেপাশে গেলে তারা তাকে মেরে ফেলবে। এ ঘটনার পনেরদিন পরই আব্দুর রহিমের লাশ পাওয়া যায়।
এদিকে নিহত আব্দুর রহিমের পা মাটির সঙ্গে লেগে থাকাবস্তায় লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলানো ছিল। এছাড়াও যে ওড়না দিয়ে ঝুলছিল তাও ইয়াছমিনের বলে অনেকে সনাক্ত করেছেন। এসব বিষয় দেখে আব্দুর রহিমকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সন্দেহ করছে আব্দুর রহিমের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন। এছাড়াও আত্মহত্যা করেছে বলে নিশ্চিত করার তার মোবাইল থেকে হয়তো তারাই (ইয়াছমিনের পরিবার) এসমএম পাঠিয়েছে।
অপরদিকে আব্দুর রহিমের হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ইটা বাগানের শ্রমিকেরা ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন ও বিক্ষোভ করেছে। বাগানের স্টোরের শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় বক্তব্য রাখেন বাগানের ব্যবস্থাপক ফারুক আহমদ চৌধুরী, বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি নাসিম আহমদ ও স্থানীয় জমির উদ্দীন প্রমুখ।
ইটা চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি নাসিম আহমদ বলেন, আব্দুর রহিমের হত্যাকারীদের শাস্থির দাবিতে ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করা হয়েছে। তার পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলানো হয়েছে। তবে পুলিশ বলেছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া হত্যা না আত্মহত্যা বলা যাচ্ছে না।
ইটা চা বাগানের ম্যানেজার তার বক্তব্যে বলেছেন, শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে আইন নিজেদের হাতে তুলে না নিতে। পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলবেন। এছাড়াও শ্রমিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।