রাজনগরে ধান সংগ্রহ স্বচ্ছ করতে অভিনব পন্থা প্রশাসনের
প্রকাশিত হয়েছে : ৮ জুলাই ২০১৯, ৫:১১ অপরাহ্ণ
আব্দুর রহমান সোহেল, রাজনগর ::
৮টি নীল রংয়ের ড্রাম। ড্রামের মুখগুলো কাগজ-কস্টেপ দিয়ে বিশেষভাবে মোড়ানো। ছিদ্র দিয়ে ড্রামগুলোতে নিজেদের কৃষি কার্ড ফেলছেন উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষকরা। সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ নিয়ে কৃষকদের মাঝে ছিল বিস্তর অভিযোগ। প্রথম ধাপে উপজেলার ৮ইউনিয়ন থেকে সাড়ে ৩শ কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করেছিল প্রশাসন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দেয়া তালিকাতে ছিল অভিযোগের শেষ ছিল না। তাই এবার দ্বীতিয় ধাপে ধান সংগ্রহের জন্য নেয়া হয়েছে অভিনব পন্থা। গত শনিবার (৬জুলাই) উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মাইকিং করে কৃষকদের কার্ড জমা দিতে বলা হয়। রবিবার সকাল থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত কার্ড সংগ্রহ করা হবে। পরে লটারীর মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হবে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জুন উপজেলা অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালার আলোকে উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন থেকে মোট ৫৮৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের জন্য প্রান্তিক কৃষক ও মহিলা কৃষকদের অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাই বিতর্ক এড়াতে কৃষি কার্ড সংগ্রহের জন্য মাইকিং করা হয়েছে ৮টি ইউনিয়নেই। যাদের নিজস্ব জমি আছে এমন কৃষকদের কার্ড যাচাই-বাছাই করে কার্ডের ফটোকপিতে জমির পরিমাণ বিবেচনা করে বিক্রয়যোগ্য ধানের পরিমাণ উল্ল্যেখ করে দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। এসব ফটোকপি ৮টি ইউনিয়নের কৃষকদের জন্য স্থাপিত আলাদা আলাদা অস্থায়ী বাক্সে (ড্রাম) ফেলছেন কৃষকরা। মঙ্গলবার পর্যন্ত এভাবে কার্ড সংগ্রহ চলবে। পরে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মুখে লটারীর মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষকরা ধান বিক্রি করতে পারবেন। নির্বাচিতদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস, কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা খাদ্য গুদামের নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেয়া হবে। অধিক সংখ্যক কৃষককে সুযোগ দেয়ার জন্য এবার একজন কৃষক ১২০ কেজি থেকে শুরু করে ১ মেট্রিক টন পর্যন্ত ধান বিক্রি করতে পারবেন।
কামারচাক ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের কৃষক মো. গৌছ মিয়া বলেন, মাইকিং শুনে আমিসহ এলাকার কয়েকজন কার্ড জমা দিতে এসেছি। আগেরবার ধান সংগ্রহের খবর পাইনি। এখন যে পদ্ধতিতে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে তাতে আমরা ধান বিক্রয়ের সুযোগ পাব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহীদুল ইসলাম বলেন, কৃষক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকার প্রান্তিক কৃষক ও মহিলা কৃষকদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এবার লটারীর মাধ্যমে কৃষক বাছাই করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসী আক্তার বলেন, সরকার প্রান্তিক কৃষকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে আবারো ধান সংগ্রহ করছে। আগেরবার ধান ক্রয়ে কিছু ত্রুটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় স্বচ্ছতার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।