বড়লেখায় ৮ সিএনজি অটোরিকশা চোর গ্রেফতার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৫৬ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আন্তঃজেলা অটোরিকশা (সিএনজি) চোরচক্রের সক্রিয় ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চালককে মারধর করে একটি অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বড়লেখা থানা পুলিশের পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গত কয়েকদিনের অভিযানে তাদের গ্রেফতারের পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে চুরি করা দুটি অটোরিকশা।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন-উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের তারাদরম গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে বাবুল আহমদ (৩৫), পূর্ব চন্ডিনগর গ্রামের মৃত আজই মিয়ার ছেলে আব্দুল হান্নান (৩৪), ছমির উদ্দিন বলাইর ছেলে রাহেল আহমদ (২৫), মোহাম্মদনগর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে মো. ইউসুফ আহমদ (২৮), পৌরসভার গাজিটেকা মহল্লার সাখাওয়াত আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (২৫), সিলেট জেলার জালালাবাদ থানার মৃত উস্তার আলীর ছেলে মাছুম আহমদ (৩৫), গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে আলামিন (৩০), সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার শিপাউল ইসলাম (৩০)। তাদের মধ্যে ৫ দিনের রিমান্ডে থাকা আলামিন, মাছুম আহমদ, আব্দুল হান্নান গত ২২ ফেব্রুয়ারি এবং বাবুল আহমদ ও শিপাউল ইসলাম ২০ ফেব্রুয়ারি বড়লেখা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাস কুমারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে আদালতের নির্দেশে আসামিদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারি রাতে বড়লেখা পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনী এলাকা থেকে পরিবহন শ্রমিক নেতা রফিক উদ্দিনের সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন যাত্রীবেশে দুজন ছিনতাইকারী। দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের তারাদরম এলাকায় চালককে মারধর করে ছিনতাইকারীরা গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। এসময় চালক মুহিবুর রহমান নামে একজন ছিনতাইকারীকে চেনে ফেলেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক নেতা রফিক উদ্দিন বাদী হয়ে উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের তারাদরম গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে বাবুল আহমদ (৩৫), তার ভাই মুহিবুর রহমান (২২), মুড়াউল গ্রামের আব্দুস শুক্কুরের ছেলে সুহেল আহমদ (২২) ও তারাদরম এলাকার বেলাল আহমদের (২৬) নাম এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা রেখে থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে চোরদের অবস্থান শনাক্ত করেন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে প্রথমে সিলেট থেকে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় বাবুল আহমদকে গ্রেফতার করা হয়। বাবুলের দেওয়া তথ্যমতে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা থেকে মাছুম আহমদ ও আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মাছুম ও হান্নানের দেওয়া তথ্যমতে ছাতকের ফেরিঘাট এলাকা থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ গ্রেফতারকৃত এই তিনজনকে বড়লেখা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাস কুমার শুনানি শেষে আসামিদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২ দিনের রিমান্ডে বাবুল, মাছুম ও হান্নানের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ ১৩ ফেব্রুয়ারি সিলেটের গোলাপগঞ্জ থেকে আলামিন (৩০) ও দোয়ারাবাজার এলাকা থেকে শিপাউল ইসলামকে (৩০) গ্রেফতার করেন। এই দুজনের দেওয়া তথ্যমতে দোয়ারাবাজার এলাকা থেকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারকৃত আলামিন ও শিপাউলের ১০ দিনের ও বাবুল, মাছুম ও হান্নানের পুনরায় ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত ১৭ ফেব্রুয়ারি ৫ আসামির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে তাদের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ ১৯, ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে রাহেল আহমদ (২৫), আব্দুল কুদ্দুস (২৫) ও মো. ইউসুফ আহমদকে (২৮)। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত তিনজনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা আবেদন করেছেন।
তাদের মধ্যে ৫ দিনের রিমান্ডে থাকা আলামিন, মাছুম আহমদ, আব্দুল হান্নান গত ২২ ফেব্রুয়ারি এবং বাবুল আহমদ ও শিপাউল ইসলাম ২০ ফেব্রুয়ারি বড়লেখা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাস কুমারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে আদালতের নির্দেশে আসামিদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক বলেন, ‘অটোরিকশা চুরির মামলায় সব মিলিয়ে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা একটি বড় চক্র। সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক ও দোয়ারাজার মিলিয়ে এদের অবস্থান। চোরাই গাড়িগুলো ওখানে নিয়ে তারা বিক্রি ও ব্যবহার করে।