বড়লেখায় আত্মীয়-স্বজনদের টাকায় নির্বাচনে লড়ছেন ৫ মেয়র প্রার্থী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫, ৬:৪০ অপরাহ্ণ
এ.জে লাভলু, বড়লেখা :
বড়লেখা পৌরসভার ৬ প্রার্থীর মধ্যে ৫ জনই প্রবাসী ও আত্মীয়-স্বজনের দানের টাকায় নির্বাচনী ব্যয় মেটাবেন। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাব্য উৎস ও ব্যয়ের সম্ভাব্য খাতের বিবরণীতে তাঁরা এ তথ্য দিয়েছেন।
হলফনামায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করা হয়েছে এইচএসসি পাশ। তাঁর বিরুদ্ধে জেলা হাকিমের আদালতে ৭টি ফৌজদারী মামলা ছিল। এর মধ্যে ৫টিতে বেকসুর খালাস ও দুটিতে অব্যাহতি পেয়েছেন। একটি করাতকলের মালিক তিনি। ৭০ শতক কৃষিজমি থেকে বছরে তাঁর আয় ২০ হাজার টাকা। আর ব্যবসা থেকে আয় হয় দুই লাখ টাকা। যৌথ মালিকানায় তাঁর একটি বাড়ি আছে। ব্যাংকে জমা আছে ৭০ হাজার ৬২৭ টাকা। ব্যবসার ২০ হাজার টাকা ও চাকুরীজীবী ভাইয়ের কাছ থেকে স্বেচ্ছা প্রণোদিত দান হিসেবে পাওয়া ৮০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচনী ব্যয় মেটাবেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
বিএনপির প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম এর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাস। তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ঠিকাদার। বড়লেখার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারী মামলা তদন্তনাধীন রয়েছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা হাকিমের আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। সাড়ে ৯ শতকের কৃষিজমি থাকলেও এ খাত থেকে তাঁর কোনো আয় নেই। যৌথ মালিকানায় তাঁর একটি বাড়ি আছে। বড়লেখার একটি ব্যাংকে তাঁর ১ লাখ ৪ হাজার ৯০৭ টাকা ঋণ আছে। ফ্রান্স প্রবাসী ভাতিজার কাছ থেকে স্বেচ্ছা প্রণোদিত দান হিসেবে পাওয়া ৯৫ হাজার টাকা ও পাশের জুড়ী উপজেলার বিএনপির এক নেতার কাছ থেকে দানের ২০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচন করছেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল নূর স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। ১৫ একরের যৌথ মালিকানার কৃষিজমি থেকে বছরে তাঁর আয় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ব্যাংকে নিজের নামে ৮ লাখ টাকা জমা আছে। তিনি যৌথ মালিকানার বাড়িতে থাকেন। ব্যবসায়ী ভাইয়ের কাছ থেকে দান হিসেবে পাওয়া ৭০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচন করছেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মতিউর রহমান এর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাশ। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। সাড়ে ১০ শতকের কৃষিজমি থেকে বছরে তিনি ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা আয় করেন। তাঁর কোনো বাড়ি নেই বলে উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভাতিজার দান করা ৮০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচনী ব্যয় মেটাবেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মীর মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান বিএ পাস হলেও বেকার। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। যৌথ মালিকানায় একটি বাড়ি আছে। কাতার প্রবাসী বন্ধুর কাছ থেকে দান পাওয়া ১ লাখ টাকায় তিনি নির্বাচন করছেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী খিজির আহমদ আলিম পাশ। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। ব্যবসা থেকে বছরে তাঁর আয় হয় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। নিজের নামে ২ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার, ১ লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস ও আসবাব সামগ্রী এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকা আছে। ব্যাংকে জমা আছে ৩ হাজার ৯৬৩ টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলার তথ্য হলফনামায় উল্লেখ নেই। ব্যবসার ৩০ হাজার টাকা ও ভাইয়ের কাছ থেকে ধার করা ৭০ হাজার টাকায় তিনি নির্বাচনী ব্যয় মেটাবেন বলে উল্লেখ রয়েছে।