কুলাউড়ায় প্রচারণামূখর সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ নভেম্বর ২০১৫, ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ
নাজমুল ইসলাম, কুলাউড়া ::
মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও কুলাউড়া পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা এখন থেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। প্রার্থীদের ডিজিটাল বিলবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুনে শহরের প্রধান সড়ক, ওয়ার্ড ও মহল্ল¬া ছেয়ে গেছে। প্রার্থীরা নিজে এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে প্রার্থী হবার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের এমন সরব তৎপরতায় পৌরসভায় নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশে ২৪৫টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে কুলাউড়া পৌরসভাও রয়েছে। সরকার ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সিদ্ধান্তে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নতুন করে হিসেব নিকেশ করতে হচ্ছে।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন সেটি চূড়ান্ত না হলেও সব প্রার্থীই নিজ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। প্রার্থীরা কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের সাথে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ঘরাণার সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা মাঠের প্রচারণায় রয়েছেন অনেকটা নীরবে। বিএনপি দলীয়ভাবে কোন প্রার্থী দিবে কিনা সেটা এখনো কোন সূত্র নিশ্চিত করেনি।
তবে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জমান সজল বিএনপির দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানা যায়। এদিকে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে তারা দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারবে না।
নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা ছাড়াও কয়েকজন প্রবাসী কমিউনিটি নেতা। এরা হলেন, উপজেলা বিএনপি একাংশের সভাপতি ও বতর্মান পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ, কাদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক একেএম সফি আহমদ সলমান, জেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সিপার উদ্দিন আহমদ, উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আলহাজ্ব শফি আলম ইউনুছ (মহালদার), উপজেলা আওয়ামীলীগ বন ও পরিবেশ সম্পাদক সফিউল আলম সফি, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জমান সজল, কুলাউড়া ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন স্কটল্যান্ডের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আহমদ, পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি মুহিবুর রহমান মাস্টার, প্রবাসী কমিউনিটি নেতা আলহাজ্ব আব্দুল্ল¬াহ আল মামুন রেনু। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) গিয়াস উদ্দিন আহমদ ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নেহার বেগম এর মধ্য থেকে একজনকে দলীয় প্রার্থী করার ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে দিন যত ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে শহরের হোটেল-রেস্তোরা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর জনসমাগমস্থলগুলোতে সরব আলোচনা চলছে। কে কোন দলের প্রার্থী হবেন, কে দলীয় মননোয়ন পাবেন, কে মেয়র হলে কি করবেন এ সকল নানা বিষয় আলোচনায় উঠে আসছে। ঈদ ও পূজোকে উপলক্ষ্য করে তোরণ, ডিজিটাল বিলবোর্ড ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তাঁরা। ভোটারদের মন জয় করতে নানা কৌশলে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগাম দোয়া ও আশীর্বাদ নিচ্ছেন। বিভিন্ন সভা, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নের জন্য তাদের নানা পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছেন।
প্রার্থীরা সমর্থক ও শুভাকাঙ্খীদের মাধ্যমে কৌশলে চালাচ্ছেন ভোটের জরিপ। ভোটারদের আগাম সমর্থন আদায়ে করছেন উঠান বৈঠক। প্রচারণায় থাকছেন প্রার্থীদের আত্মীয়স্বজন, সমর্থক ও কর্মীরা। তাদের মতামত নিয়ে ঠিক করা হচ্ছে ভোটের আগাম পরিকল্পনা। বর্তমান মেয়র প্রকাশ্যে প্রচারণা না চালালেও নীরবে চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরাও সরব প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩ থেকে ৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। ব্যানার ও ফেস্টুনের মাধ্যমে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। স্থানীয় ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে নিয়মিত সংযোগ করছেন। #