পলো বাওয়া উৎসব
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০১৫, ১২:১৬ অপরাহ্ণ
প্রণীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ::
পুরোদমে শুষ্ক মৌসুম শুরু না হলে ও কমলগঞ্জ উপজেলার বুক দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীসহ বিভিন্ন এলাকার প্রবহমান ছোট ছোট ছড়া বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে শুরু হয়েছে পলো বাওয়া উৎসব। প্রতিবছর এই সময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সৌখিন মৎস্য শিকারীরা দল বেঁধে উৎসব মুখর পরিবেশে পলো বাওয়ায় অংশগ্রহণ করে।
পলো বাওয়া উৎসব হলো দল বেঁধে (বাঁশ দিয়ে বিশেষ ভাবে তৈরী ঝাঁপি) মাছ ধরা। শরতের শেষ দিকে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি যখন কমতে শুরু করে তখন থেকেই শুরু হয় মাছ ধরার প্রস্তুতি। বিশেষত: হাওর এলাকায় এই উৎসব বিশাল আকারে হয়। কমলগঞ্জে সে রকম ব্যাপক প্রস্তুতি না নিলে ও সৌখিন মাছ শিকারীরা নিজেদের আলাপ-আলোচনা করে বাওয়ার দিন ক্ষণ নির্ধারণের পর তারা নদীতে ও ছড়া সমুহে পলো বাওয়া শুরু করেন।
পলো বাওয়ার ঘোষণা শুনার পর আগ্রহী সৌখিন মাছ শিকারীরা বাঁশের তৈরী পলো, ক্ষেতজাল, টাকজাল, ধর্মজাল, টায়াজাল, বেড়জাল, কোচ, টেঁটা প্রভৃতি নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে একেক জলাশয়ে একেক দিন এই বাওয়া উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। মাসব্যাপী এই উৎসব চলে।
গত রোববার কমলগঞ্জ উপজেলায় শুভ সূচনা হয়েছে মাসব্যাপী এই উৎসবের। প্রথম দিনে উপজেলা সদরের ধলাই নদীতে সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে এই বাওয়া উৎসব।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জের প্রবীন মাছ শিকারী মোঃ ইসহাক মিয়া জানান, দিন দিনই পরিবেশ ও আবহাওয়ার প্রতিকূলতার কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওরের তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে পানি হ্রাস এবং অধিকাংশ জলাশয় ইজারা দেওয়ায় পলো বাওয়া উৎসব এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে।
অভাব অনটন ক্রমশ: গ্রাস করে ফেলছে চিরাচরিত এই গ্রামীণ উৎসবের অতীত ঐতিহ্যকে। তার মতে প্রাচীন এই উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে সর্বমহলের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।