বড়লেখায় গৃহকর্মী নির্যাতন ॥ গৃহকর্ত্রী গ্রেফতার
প্রকাশিত হয়েছে : ৭ অক্টোবর ২০১৫, ৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ
এ.জে লাভলু, বড়লেখা:
বড়লেখায় নাজমা বেগম (১৬) নামে এক গৃহকর্মী গৃহকর্ত্রীর শারিরিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে গৃহকর্মী সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি ঘটে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের পাঁচাপাড়া গ্রামে।
নাজমা বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিছরাবন্দ গ্রামের হতদরিদ্র মনসুর আলীর কন্যা।
এ ঘটনায় নাজমার বাবা মনসুর আলীর দায়ের করা মামলায় পুলিশ মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) গৃহকর্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গ্রেফতার করেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিছরাবন্দ গ্রামের হতদরিদ্র মনসুর আলী প্রায় এক বছর পূর্বে মেয়ে নাজমা বেগমকে গৃহকর্মীর কাজে দেন পাঁচপাড়া গ্রামের আজির উদ্দিনের বাড়িতে। প্রায় ৩ মাস পর নাজমার পরিবারের অনুমতি ছাড়াই তাকে নিজের মেয়ে লুৎফার শশুর বাড়ি কুমিল্লার লাকসামে পাঠিয়ে দিয়ে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন গৃহকর্ত্রী রাবেয়া। এ সময় নাজমার বাবা-মা মেয়ের খোঁজ করলেও রাবেয়ার পরিবার থেকে বলা হয়-তোমার মেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর ঈদের দিন মেয়েকে দেখতে আবারও পাঁচপাড়া গ্রামের আজির উদ্দিনের বাড়িতে উপস্থিত হন নাজমার বাবা-মা। এ সময় গৃহকর্ত্রী রাবেয়ার মানসিক ভারসাম্যহীন স্বামী আজির উদ্দিন ফাঁস করে দেন সব গোঁমর।
তিনি মনসুর আলীকে বলেন “ওই বেটা তর পুড়ি তো আমার ঘরো বন্দি আছে ৩ মাস ধরে। তর পুড়িরে লইয়া যা”। এ কথা শুনে মনসুর আলী এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মেয়েকে উদ্ধার করেন। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচন ধরেছে ও শরীর ক্ষত বিক্ষত হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেয়েটি বর্তমানে হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৬নং ওয়ার্ডের ৭নং বেডে চিকিৎসাধীন আছে।
নাজমার পিতা মনসুর জানান, তারা আমার মেয়েকে বাসায় আটকে রেখে প্রতিদিন রুটি বানানোর বেলুন দিয়ে পেটাতো। প্রতিদিন চলতো নির্যাতন। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা বলেছেন নাজমার একটি পা কেটে ফেলা হতে পারে। এছাড়া আমার মেয়েটির শরীরে অসংখ্য ক্ষত চিহ্ন রয়েছে নির্যাতনের। গত ৩ মাস থেকে আমার মেয়ের সাথে তারা কোন যোগাযোগ করতে দেয়নি।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) বড়লেখা থানায় গৃহকর্ত্রী রাবেয়া বেগম, তার মেয়ে লুৎফা বেগমসহ ৩ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন নাজমার বাবা মনসুর আলী।
এ বিষয়ে বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ গৃহকর্ত্রী রাবেয়াকে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করেছে। মামলার অন্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। #