কুলাউড়ার ঝিমাই পানপুঞ্জি ও চা-বাগানের বিরোধ
স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে পুঞ্জিবাসীর সাথে বিভাগীয় কমিশনারের বৈঠক
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুলাই ২০১৫, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ঝিমাই পানপুঞ্জি ও ঝিমাই চা-বাগানের বিরোধ নিরসনের লক্ষ্যে আজ বুধবার সিলেট বিভাগীয় কমিশনার জয়নাল আহমেদের নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঝিমাই পানপুঞ্জি পরিদর্শন করেছেন। এ সময় কর্মকর্তারা পানপুঞ্জিবাসীর সাথে প্রায় দেড় ঘন্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে উভয়পক্ষ তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আদিবাসী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শক দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, কুলাউড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলমগীর হোসেন, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আ স ম কামরুল ইসলাম, কুলাউড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আদিবাসী নেতৃবৃন্দের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন পানপুঞ্জি সংগঠন কুবরাজ আন্তঃপুঞ্জি সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী নেত্রী ফ্লোরা বাবলী তালাং, পাত্র সম্প্রদায় কল্যাণ পরিষদের সভাপতি গৌরাঙ্গ পাত্র, খাসি সোস্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমি, ঝিমাই পানপুঞ্জির মন্ত্রী (পুঞ্জি প্রধান) রানা সুরং, ঝিমাই চা-বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন সরকার প্রমুখ।
স্থানীয় প্রশাসন, আদিবাসী নেতৃবৃন্দ ও ঝিমাই পানপুঞ্জি সূত্রে জানা গেছে, আদিবাসী খাসিয়াদের গ্রাম ঝিমাই পানপুঞ্জি ও ঝিমাই চা-বাগানের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে ভূমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে। ঝিমাই চা-বাগান কর্তৃপক্ষ চা-বাগান সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিলে আদিবাসী খাসিয়াদের মধ্যে উচ্ছেদ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় প্রশাসন বিরোধ নিরসনের একাধিকবার উদ্যোগ আদিবাসীরা তাঁদের জীবন-জীবিকা ও সংস্কৃতির সাথে সমঝোতার প্রস্তাব সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে তা মেনে নিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে কুবরাজ আন্তঃপুঞ্জি সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী নেত্রী ফ্লোরা বাবলী তালাং বলেন, পুঞ্জিবাসীর সাথে বৈঠকে বিভাগীয় কমিশনার পুঞ্জির প্রতি পরিবারকে দুই একর করে নিষ্কন্টক ভূমি প্রদানের প্রস্তাব করেছেন। কিন্তু দুই একর পাহাড়ি জমিতে পান চাষ করে জীবন-জীবিকা চালানো সম্ভব নয় বলে পুঞ্জিবাসীর পক্ষ থেকে পাঁচ একর করে ভূমি দাবি করা হয়েছে। বিষয়টির সমঝোতা না হওয়ায় পরে পুঞ্জিবাসী কিছুদিন সময় চেয়েছেন। এতে ১০দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে তাঁকে (বিভাগীয় কমিশনারকে) পুঞ্জিবাসীর মতামত জানাতে বলা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সমাধান না হলে সরকার যা করার করবে। এ জন্য সরকারকে দায়ী করা যাবে না।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টির চিরতরে সমাধানের জন্যই বিভাগীয় কমিশনার সাহেব এসেছিলেন। আমরা ওদের (পুঞ্জিবাসীর) সাথে বসলাম। কিন্তু সেই একই অবস্থা। আমরা যতবার এগিয়ে যাচ্ছি। নানা কারণে সমাধান হচ্ছে না। দুই একর করে কাউকে দেওয়ার সরকারের আইন নেই। তাঁদের কৃষ্টি-সংস্কৃতির দিকটি বিবেচনা করে মানবিক কারণে আমরা বলেছি দুই একর করে দেওয়ার বিষয়টি সরকারের কাছে প্রস্তাব করবো। তাঁদের সময় দিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে বলা হয়েছে।’