রাজন হত্যার আসামী কামরুল সৌদি আরবে আটক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুলাই ২০১৫, ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
সিলেটের কুমারগাঁওয়ে শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার আসামি কামরুল ইসলাম ধরা পড়েছেন সৌদি আরবে।
গত বুধবার ১৩ বছরের রাজনকে পিটিয়ে হত্যা এবং নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে দেওয়ার পর ভাই মুহিত আলম ধরা পড়লেও সৌদি প্রবাসী কামরুল (২৪) দেশ ছেড়েছিলেন।
সৌদি আরবে তাকে ধরা হয়েছে বলে দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ সোমবার রাতে নিশ্চিত করেছেন।
গোলাম মসীহ বলেন, “শাহরিয়ার সাহেব আসার পর আমাদের নির্দেশনা দেন, সে (কামরুল) যদি এসে থাকে, তবে তাকে যে করেই হোক, যেন দূতাবাসের অধীনে আনা হয়।
“সে নির্দেশনা মোতাবেক আমরা তা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিই। যে এলাকায় সে থাকত, সেই ঠিকানা নিই। সে এসেছে বলে ইমিগ্রেশনের সহায়তায় নিশ্চিত হওয়ার পর তার এলাকায় গিয়ে তাকে ধরে স্থানীয় পুলিশ সেন্টারে আনা হয়েছে। সেখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে সে।”
গোলাম মসীহ আরও বলেন, কামরুলকে বাংলাদেশে ফেরাতে কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে, যা স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করতে হবে। এখন এখানে (সৌদি আরব) অলরেডি ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি, তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। তবে মনে হয় না, ঈদের আগে সম্ভবপর হবে।
রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড়ের মধ্যে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সোমবারই বলেন, এই ঘটনায় জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত বুধবার রাজনকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করার সময় মুহিতকে পুলিশে দেয় জনতা। সোমবার তাকে আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় শেখপাড়া এলাকায় মুহিতের বাড়ি থেকে তার স্ত্রী লিপি বেগমকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
এদিন সকালে সন্দেহভাজন হিসেবে ইসমাইল হোসেন আবলুছ (২২) নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।
গত বুধবার সকালে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের রাজনকে। নির্যাতনের ভিডিও নির্যাতনকারীরা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
এরপর জালালাবাদ থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করে। ওই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন মামলাটির তদন্ত করছেন।
আসামিদের মধ্যে শেখপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালিকের ছেলে মুহিত (৩৫) ও কামরুল (২৪) ছাড়াও রয়েছেন তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না (৪৫)।
আলী হায়দার ও ময়না এখনও পলাতক হলেও তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন।
রাজনকে নির্যাতনকারীদের গ্রেপ্তারে বিশেষ দল গঠন করেছে পুলিশ, রহমত উল্লাহ নিজেই ওই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তিনি জানান, গত রাত থেকেই কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।