সংসদে সম্পূরক বাজেট পাস
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জুন ২০১৫, ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
সংসদে সরকার ও বিরোধীদলের সমর্থনে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস হয়েছে। পাসকৃত বাজেটের আকার ছিল ৯ হাজার ৫০৮ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার টাকা। দশম সংসদের দ্বিতীয় বাজেট অধিবেশনে মঙ্গলবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সম্পূরক বাজেট পাসের জন্য ভোটে দেন। এরপর সরকারি দল ও বিরোধী দলের সবার ভোটে সম্পূরক বাজেট (২০১৪-১৫) পাস হয়।
বাজেট পাসের সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বাজেটে ২৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে এবার সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা বিভাগে। এ বিভাগে বরাদ্দ এক হাজার ৮১৯ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এরপরেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল এক হাজার ৫৩৭ কোটি ২৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা। এক হাজার ৪২৩ কোটি ৬৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা নিয়ে বাজেট বরাদ্দে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। বাজেটে খরচের দিক দিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক হাজার ৩৭২ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। পঞ্চম স্থানে রয়েছে প্রতিরক্ষা এক হাজার ২৭১ কোটি ১৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
বাজেট পাসের আগে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সম্পূরক বাজেটের কঠোর সমালোচনা করেন সদস্যরা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, মো. সেলিম উদ্দিন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, টাকা খরচ করে এখন এসেছেন বাজেট পাস করে নিতে। একই কথা বলেন অন্য দুই সদস্যও।
বাজেট পাসের আগে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সম্পূরক বাজেটের কঠোর সমালোচনা করেন সরকার দলীয় এক সদস্য। সম্পূরক বাজেটের হিসাব নিয়ে সরকারি দলের দু’একজন সদস্য তীব্র সমালোচনা করলেও বাজেট পাসে সমর্থন দিয়েছে সবাই। পাস হওয়া সম্পূরক বাজেটে মন্ত্রণালয় ও বিভাগসহ ২৭টি মুঞ্জরি দাবির ওপর ১৭১টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেওয়া হয়। আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবে আটজন সদস্য তাদের যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তবে কণ্ঠভোটে তাদের ছাঁটাই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।
সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্যে অংশ নিয়ে অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘সম্পূরক বাজেটের বিবৃতিতে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয়ের বিয়টি সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হয়েছে। তবে অন্যান্য বইয়ে প্রত্যেকটি প্রকল্পে ব্যয় বিস্তারিত নামসহ তুলে ধরা হয়েছে। তারপরও ব্যয়ের বিষয়ে কোনো কিছু জানার থাকলে তা আমরা জানাতে বাধ্য আছি।’
সম্পূরক বাজেটে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে ২২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ৪৬ কোটি ৮৪ লাখ ৪৮ হাজার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ১২০ কোটি ৮০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ৮৭ কোটি ৫৯ লাখ ৩ হাজার টাকা, সরকারি কর্মকমিশনে ৮১ লাখ ২৬ হাজার, মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ে ৫০ লাখ ৫১ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে ১৪২ কোটি ৮৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা, পরিকল্পনা বিভাগে এক হাজার ৮১৯ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ৩৫ কোটি ৩৯ লাখ ২৮ হাজার টাকা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ৩৭ কোটি ৭ লাখ ১৮ হাজার টাকা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক হাজার ২৭১ কোটি ১৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, স্বশস্ত্র বাহিনী বিভাগে এক কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক হাজার ৩৭২ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৬৫৭ কোটি ৮৬ লাখ ৩৪ হাজার টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে এক হাজার ৪২৩ কোটি ৬৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ৩৯২ কোটি ১৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে ৭৮ কোটি ২৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, তথ্য মন্ত্রণালয়ে চার কোটি ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকা, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ৪৩ কোটি ৯২ লাখ ৯ হাজার টাকা, ধর্ম মন্ত্রণালয়ে ৪৫ কোটি ৯২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা, স্থানীয় সরকার বিভাগে ১৫৩৭ কোটি ২৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে ৮৭ কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে ২৪ কোটি ১৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ২২৩ কোটি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সুপ্রীম কোর্ট বিভাগে ১০ কোটি ৮০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে ৩৬ কোটি এক লাখ ৫৩ হাজার টাকা ও দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঁচ কোটি ৯২ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।