সুনামগঞ্জে ঝড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্তত পাঁচশ’ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মে ২০১৫, ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
ঝড়ে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্তত পাঁচশ’ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে ভেঙে পড়া ঘরের দেয়াল ও চালের নিচে চাপা পড়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। গুরুতর আহত ৩ জনকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার ভোররাতে তিন উপজেলা দিয়ে দু’দফায় এ ঝড় বয়ে যায়। এতে ১৪টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ি বিধ্বস্তের পাশাপাশি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ঝড়ে তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল পুরানঘাট, ব্রাহ্মণগাঁও, বোরোখাড়া, হলহলিয়া-চরগাঁও গ্রাম এবং দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামের অন্তত দুইশ’ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক পরিচালিত ৮টি স্কুল ও বোরোখাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাল উড়ে গেছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের পুরান মুক্তিকলা, কৃষ্ণনগর, রসুলপুর, লামাগাঁও, মজুমখালী, ধরেরপাড়, নতুনপাড়া ও পিয়ারিনগর গ্রামের, দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের বাঘমারা, ভাটিপাড়া, শ্রীধরপুর, সোনাপুর, কৃষ্ণতলা, কান্দারহাটি, লক্ষ্মীপুর, কালীপুর, দুর্গাপুর ও ব্রজনাথপুর গ্রামের এবং ফতেহ্পুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর, বিশ্বম্ভরপুর, চান্দারগাঁও, গোপালপুর, রায়পুর, বাহাদুরপুরসহ ৩০ গ্রামের কমপক্ষে ২৫০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামগুলোতে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়াসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ঝড়ে বিশ্বম্ভরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, দিগেন্দ্র বর্মণ ডিগ্রি কলেজ ও গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের চাল পুরোপুরি উড়ে গেছে। চাল ও দেয়াল চাপায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। গুরুতর আহত বাঘমারা গ্রামের দীপক আচার্য, সুমিতা আচার্য ও ধীরেন্দ্র পালকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বিশ্বম্ভরপুরের অন্তত ৫০টি পরিবার ঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের ৫০টি ঘরবাড়ি ও শান্তিগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এবং ছায়াতুনন্নেছ মাদ্রাসার চাল উড়ে গেছে। উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ইছাগরি, আব্দুল্লাপুর ও জগজ্জীবনপুর গ্রামে ঝড়ের সময় ঘরের নিচে চাপাপড়ে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত শান্তিগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফিকুল ইসলাম বলেন, স্কুলের ৬০ গজ লম্বা ঘরের চাল ঝড়ে উড়ে গেছে, পাকা পিলারগুলো ভেঙে গেছে। সোমবার স্কুলে আসা শিক্ষার্থীদের পাঠদান সম্ভব না হওয়ায় রোল কল করেই ছুটি দিতে হয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিতে ইতিমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।