প্রতিদিন পাচার হচ্ছে লাখ লাখ টাকার কাঠ
কমলগঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড়ের পথে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ মে ২০১৫, ২:১৩ অপরাহ্ণ
জয়নাল আবেদীন,কমলগঞ্জ ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় বনদস্যুদের দৌরাত্মে উজাড় হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। প্রভাবশালী রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও বনবিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজেসে প্রতিদিন ঠেলাগাড়ি, ট্রাক ও ট্রেনে লাখ লাখ টাকার কাঠ পাচার হচ্ছে। করাত কলে গভীর রাত পর্যন্ত চোরাই কাঠ চেরাই হলেও বনবিভাগ নীরব ভূমিকা পালন করছে।
জানা যায়, উপজেলার লাউয়াছড়া ও রাজকান্দি রেঞ্জের অধীনস্থ বিভিন্ন বনবিট এলাকা থেকে উল্লেখযোগ্যহারে পাচার হচ্ছে সেগুন, চামল, গামাই, রাও, গর্জন, জাম, শিল কড়ই, জারুল, সুন্ধি, বনাক, আউয়াল প্রভৃতি গাছ। বনাঞ্চল থেকে প্রায় প্রতিদিনই গাছ চুরি বা পাচার হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে উজাড় হয়ে যাচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এছাড়া চা বাগানগুলোতে ছায়াদানকারী বৃক্ষ পাচার হচ্ছে। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে প্রায়ই গাছ চুরি হয়ে থাকে। গাছ পাচারের সাথে জড়িতদের অধিকাংশই প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের চিহ্নিত লোক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গতকাল ১৫ মে শুক্রবার বিকাল ৫ টায় শমশেরনগর রেল স্টেশনে সিলেটমুখী সুরমা মেইল থেকে চোরাই সেগুন কাঠ উদ্ধার করা হয়। বিকাল সাড়ে চারটায় সিলেটগামী সুরমা মেইল ট্রেন কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেল স্টেশনে এসে থামে। এ সময় চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীরা সিলেট পাচারের জন্য সুরমা মেইলের একটি যাত্রীবাহী বগিতে সেগুন কাঠ তুলে। তাৎক্ষনিকভাবে এ ঘটনার খবর কমলগঞ্জের রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মালেকুজ্জামানকে অবহিত করা হলেও রহস্যজনক কারণে তিনি ট্রেনের বগি থেকে কাঠ উদ্ধারে কোন ভূমিকা পালন করেননি। বিষয়টি জেনে কমলগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার নির্দেশে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মতিউর ট্রেনের বগি তল্লাশি করে চোরাই সেগুন কাঠ উদ্ধার করেন।
এ ব্যাপারে রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মালেকুজ্জামান বলেন, লোকবল ও পরিবহন সংকটের কারণে তিনি সময়মত তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করতে পারেননি বলে জানান। এছাড়া অচিরেই কমলগঞ্জের করাত কলে অভিযান চালাবেন বলে জানান। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলসহ সকল প্রকার গাছ চুরি রোধে উপজেলা প্রশাসন কঠোর হস্তে দমন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ইতিমধ্যে শমশেরনগর ও ভানুগাছ রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে চোরাইা কাঠ উদ্ধার করেছি। গাছ পাচারের সংবাদ পাওয়া মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।