শ্রীমঙ্গল থানার ওসি সহ ৬ পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মে ২০১৫, ৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ ৬ পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মৌলভীবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল ১৩ মে বুধবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট মোহাম্মদ জুলফিকার আলীর আদালতে নির্যাতিত সাংবাদিক সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রুমি বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলে- শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল, এসআই গিয়াস উদ্দিন, এসআই মো. জাকির হোসেন, এসআই মো. মাসুদ, ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. মাহফুজ, এএসআই মো. বাশার।
মামলাটি বিজ্ঞ বিচারক আমলে নিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ডিবির ওসিকে আগামী ১৪ জুলাই ২০১৫ তারিখে প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদী রুমী বেগম উল্লেখ করেন তার স্বামী সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম দৈনিক জনতা, ঢাকা বাংলা ট্রিবিউনে শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তিনি বিভিন্ন সময় শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করেন। এর জের ধরে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুল জলিল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তার স্বামীকে ওসি নানা সময় মোবাইল ফোনে হুমকি দেন। তিনি তাকে হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন তার লেখনি অব্যাহত থাকলে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে আটকিয়ে রাখবেন ও পুলিশ রিমান্ডে এনে উচিত শিক্ষা দিবেন।
মামলার বিবরণে আরও জানা যায়, সাইফুল ইসলামকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি নাশকতার মামলায় আসামী করেন ওসি আব্দুল জলিল। এবং ওই মামলায় গ্রেফতার হয়রানী ও অভিযোগপত্র হতে মুক্ত হতে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন ওসি। বাদীর স্বামী তার সততায় অবিচল থেকে একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে তার কর্ম অব্যাহত রাখেন। গত ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ ঘটিকার সময় শ্রীমঙ্গল শহরের রুপসপুরস্থ বাসা থেকে সাইফুল ইসলাম একা বের হয়ে পূর্বাশা এলাকায় যাওয়ার সময় শ্রীমঙ্গল শহরের ক্যাথলিক মিশন রোড এলাকায় পৌঁছলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সিএনজি অটোরিক্সা থেকে সাদা পোশাকে কয়েকজন পুলিশ নেমে পেছন দিক থেকে ঝাপটে ধরলে সাইফুল ইসলাম অপহরনকারী ও ছিনতাইকারী ভেবে আত্মরক্ষার জন্য চিৎকার করেন এবং তাদের কাছ থেকে নিজে রক্ষা পেতে চেষ্টা করেন। এসময় তার সাথে ছিল ল্যাপটপ, নগদ ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল সেট। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুল জলিল সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যকে চিনতে পারেন। সেখান থেকে তাকে টেনে হিচড়ে নেয়া হয় শ্রীমঙ্গল থানায়। ওই রাতেই শ্রীমঙ্গল থানা ওসি আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে চোখ বেঁধে তারই কক্ষে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে থানা হাজতেও তাকে নির্যাতন করা হয়। তাদের নির্যাতনে সাংবাদিক সাইফুলে হাত পা ও কোমর থেঁতলে যায়। পরবর্তীতে নির্যাতনের স্বীকার সাইফুল ইসলামকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ও পরে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপালে চিকিৎসা দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি আত্যাচার ও নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে আছেন।