পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষকদের মোবাইল ফোন বহনে নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মে ২০১৫, ৫:০০ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও অসদুপায় ঠেকাতে পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি পরীক্ষকদেরও কেন্দ্রে মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শুধু কেন্দ্র সচিব নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবেন। তবে পরীক্ষা চলাকালে তার মোবাইল ব্যবহারের উপরও কড়াকড়ি থাকবে।
এইচএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক এক সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের তথ্য তুলে ধরেন।
এসএসসি, এইচএসসিসহ পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষকেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেক পরীক্ষার্থী এসব নিয়ে হলে প্রবেশ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আর পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষকদের মোবাইল ফোন বহনে এতদিন কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। এর আগে বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায়ও মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ করে সরকারি কর্ম কমিশন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো পরীক্ষক মোবাইল ফোন ও কোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিবকেও নিজের মোবাইল ফোন অন্য কোনো কক্ষে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। প্রয়োজনে তিনি ওই কক্ষে গিয়ে ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। পরীক্ষাকেন্দ্রে কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কারো কাছে মোবাইল ফোন ও কোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
সভায় গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম জানান, মোবাইল ফোন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ঘড়ি ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীরা অসদুপায় অবলম্বন করে। এছাড়া বিশেষ কলমে মোবাইল সিম ব্যবহার করা হচ্ছে।
চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ না ওঠায় সন্তোষ প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান শিক্ষামন্ত্রী। তবে পরীক্ষার হলে কিছু সংখ্যক পরীক্ষকের পরীক্ষার্থীদের সহায়তার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে নাহিদ বলেন, পুরো শিক্ষক সমাজের উপরই এই কলঙ্ক বর্তায়। এর সঙ্গে জড়িত কেউই রেহাই পাবেন না।
গত ৮ মে বরগুনার আমতলী ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে নয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নকলে সহায়তার অভিযোগ উঠলে ওই কেন্দ্রের সব পরীক্ষা বাতিল করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় দায়িত্বে যারা আছেন তারাও যদি পরীক্ষার্থীদের কোনো ধরনের সহযোগিতা করেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান অনৈতিক কোনো কাজে জড়ালে তার চাকরি চলে যাবে। পাবলিক পরীক্ষায় যেসব শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের সহায়তা করছেন তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলেও শিক্ষামন্ত্রী জানান।
সভায় শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।