বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন ‘মেঘালয়ের হাসপাতালে’, ফোন করেছেন স্ত্রীকে
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মে ২০১৫, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের একটি মানসিক হাসপাতালে আছেন দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ এই তথ্য জানান।
গুলশানে নিজের বাসার নিচতলায় সংবাদ সম্মেলনে হাসিনা আহমেদ বলেন, আজ সকালে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফোন দিয়ে জানায়, সালাহ উদ্দিন তাঁদের হাসপাতালে আছেন। পরে সালাহ উদ্দিন টেলিফোনে স্ত্রীকে বলেন, আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে আছেন।
শিলং টাইমসের সম্পাদক মানস চৌধুরী জানান, গতকাল মেঘালয়ের গলফ গ্রিন এলাকায় ঘোরাফেরার সময় সালাহ উদ্দিনকে পুলিশ আটক করে। প্রথমে তাঁর কথা শুনে পুলিশের মনে হয়েছে, তিনি অপ্রকৃতিস্থ। এরপর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ বলে চিকিৎসকেরা জানান। সালাহ উদ্দিন চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, তাঁর হার্টের সমস্যা আছে। তাঁকে হার্টের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে অজ্ঞাত স্থান থেকে এক মাসের বেশি সময় ধরে বিএনপির নামে বিবৃতি পাঠিয়ে আসা সালাহ উদ্দিনকে গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩-বি নম্বর সড়কের একটি বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাটে ঢুকে গোয়েন্দা পুলিশ ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করে আসছিলেন তার স্ত্রী।
স্বামীর খোঁজ চেয়ে পরদিন রাতে গুলশান থানা ও উত্তরা থানায় জিডি করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি বলে সে সময় তিনি অভিযোগ করেন।
সরকারের ‘নির্দেশে’ আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই সালাহউদ্দিনকে ‘নিয়ে গেছে’ বলে সে সময় বিএনপির পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে সে অভিযোগ নাকচ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে তাকে আটক করতে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সালাহ উদ্দিনের অন্তর্ধানে তার দলের ‘হাত রয়েছে’ বলেও সে সময় ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বামীর খোঁজ চেয়ে উচ্চ আদালতেও যান সাবেক সাংসদ হাসিনা আহমেদ। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, তারাও এই বিএনপি নেতার কোনো খোঁজ জানে না।
সালাহ উদ্দিনকে খুঁজে পাওয়া গেল কি-না সে বিষয়ে নিয়মিত অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে হাই কোর্ট গত ১২ এপ্রিল আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেয়।
এর মধ্যে ১৯ মার্চ ও ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে দুই দফা স্মারকলিপি দিয়ে আসেন হাসিনা আহমেদ। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করারও ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এরপর আজ মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ বিএনপি সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের বরাত দিয়ে সালাহ উদ্দিনের ফোন আসার খবর গণমাধ্যমে এলে নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়।
এরই মধ্যে দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে তার গুলশানের বাসায় যান সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী। প্রায় ৪৫ মিনিট পর বেরিয়ে এসে পরে তিনি নিজেই ফোন পাওয়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন।
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহ উদ্দিন। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য হন এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তার স্ত্রী হাসিনাও সংসদ সদস্য ছিলেন।