আশুলিয়ায় ব্যাংক ডাকাতদের আস্তানায় পাওয়া গেল ‘ডিবির জ্যাকেট’
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মে ২০১৫, ১:৩৭ অপরাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
সাভারের আশুলিয়ায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের শাখা অফিসে ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের এক ‘আস্তানার’ সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। সেখানে পাওয়া গেছে ‘ডিবি’ (গোয়েন্দা পুলিশ) লেখা চারটি জ্যাকেট।
ঢাকা জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুল হাসান কিরণ জানান, রোববার সকালে আশুলিয়ার আড়াগাঁও গ্রামে শাজাহান মিয়ার টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জ্যাকেট ছাড়াও কয়েক হাজার বোতল ভেজাল তেল ও ‘শক্তিবর্ধক ওষুধ’ পাওয়া গেছে। তবে বাড়ির মালিক শাজাহানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এএসপি নাজমুল হাসান বলেন, আশুলিয়ার কাঠগড়ার যে ব্যাংকে ডাকাতি হয়েছিল সেখান থেকে ওই বাড়ি প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে। গত ২১ এপ্রিল দুপুরে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত এক ডাকাত সদস্যকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই বাড়ির খোঁজ পাওয়া যায়। ডাকাতরা বাড়িটি নিজেদের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করছিল।
পুলিশের ধারণা করছে, ডাকাতরা ‘শক্তিবর্ধক ওষুধ’ তৈরির কারখানার আড়ালে ডিবি পুলিশের জ্যাকেট ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। সেখানে থেকেই তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
এএসপি নাজমুল হাসান আরও বলেন, কমার্স ব্যাংকে ডাকাতি ও খুনের পর শরীরে রক্ত মাখা অবস্থায় পালিয়ে এসে তিন ডাকাত দীর্ঘসময় এই আস্তানায় লুকিয়ে ছিল। ঘটনার দিন পুলিশ আশপাশের সকল বাড়ি তল্লাশি করে। এমনকি ওই বাড়ির পাশের ঘরেও তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু ডাকাতরা যেখানে লুকিয়ে ছিল সেই বাড়িতে নক করলে পর্দানসীন দুই নারী বেরিয়ে এসে পুলিশকে বলে, ঘরে কেউ নেই। তাই তখন পুলিশ চলে যায়। সেই মুহূর্তে তল্লাশি করা হলে তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার সম্ভব হত।
ডাকাতির ঘটনার পর থেকে বাড়ির মালিক শাজাহানের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তার ফোনও বন্ধ রয়েছে। তার স্ত্রী হাসিনা বেগমও পুলিশকে স্বামীর কোন তথ্য দিতে পারেনি।
তাদের তিন ছেলের সবাই আড়াগাঁও এলাকার একাটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন।
শাজাহানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে এএসপি বলেন, তার স্ত্রী-সন্তানরাও পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে।
তবে ‘তদন্তের স্বার্থে’ শনিবার রাতে গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সদস্যের পরিচয় জানাননি তিনি।
গত ২১ এপ্রিল দুপুরে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের কাঠগড়া বাজার শাখায় ঢুকে বোমা মেরে, গুলি চালিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তারক্ষীসহ তিনজনকে হত্যা করে ক্যাশ থেকে টাকা লুট করে ডাকাতরা। তারা বেরিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা প্রতিরোধ করলে ডাকাতদের গুলি ও বোমায় আরও চারজন নিহত হন।
জনতার ধাওয়ার মুখে সন্দেহভাজন ডাকাতদের দুজন মোটর সাইকেল থেকে পড়ে গেলে গণপিটুনিতে নিহত হন একজন। অন্যজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই দিন পর হাসপাতালে মারা যান।
১৯ দিন আগের ব্যাংক ডাকাতির ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ডাকাত দলের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কয়েকজনের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কথাও জানিয়েছে পুলিশ।