৩ মাস ধরে সিলেট-ছাতক ট্রেন চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ এপ্রিল ২০১৫, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
নিরাপত্তার অজুহাতে ৩ মাস ধরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে সিলেট-ছাতক রেল লাইনে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। ট্রেনটি কবে নাগাদ চালু হবে-এ ব্যাপারে কোন বক্তব্যও পাওয়া যাচ্ছে না সংশ্লিষ্টদের।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে নিরাপত্তার অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয় এ রুটের ট্রেন সার্ভিস। মাঝে মধ্যে সিলেট-ছাতক লাইনে মালবাহী ট্রেন চলাচল করলেও একেবারেই বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন।
সিলেট হতে ছাতক পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কি.মি দীর্ঘ রেলপথটি ১৯৫৬ সালে নির্মাণ করা হয়। এ লাইনে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন ট্রেন সার্ভিস চালু ছিল। ট্রেনে প্রায় ৪৫ মিনিটে ছাতক হতে সিলেট পৌঁছতে পারতেন যাত্রীগণ। সিলেট হতে ছাতক যেতে ট্রেনটি পথিমধ্যে দু’টি স্টেশনে (আফজালাবাদ ও খাজাঞ্চীগাঁও) যাত্রাবিরতি করতো। ছাতক, আফজালাবাদ ও খাজাঞ্চীগাঁও-এ তিনটি রেলস্টেশনের পাশ্ববর্তী এলাকার বিপুল সংখ্যক যাত্রীর সিলেট নগরীতে যাওয়া-আসার একমাত্র উপায় ছিল এটি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮৫ সাল থেকে ওই রেলপথে মন্দাভাব দেখা দেয়। শিল্প নগরী ছাতক থেকে চুনা পাথর, সিমেন্ট, স্লিপার, বালু, বোল্ডার ও ভাঙা পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো এ রেলপথ দিয়ে। বর্তমানে এ লাইনের বেহাল দশা। অকেজো স্লিপার, মেয়াদ উত্তীর্ণ বগি, পর্যাপ্ত পাথরের অভাব এবং যথাসময়ে প্রয়োজনীয় মেরামত না করায় এ পথে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের প্রায়শ লাইনচ্যুতের খবর মেলে। দেশের বেশিরভাগ পাথর-স্লিপার ছাতক থেকে সরবরাহ হলেও এ রেলসেকশনের রেল পথে অনেক স্থানেই নেই পাথর।
যাত্রী সাধারণের যাতায়াতের জন্য দু’টি জরাজীর্ণ বগি দেওয়া হতো। ট্রেনের এসব বগিতে নেই বিদ্যুৎ ও পানির সুবিধা, নেই দরজা-জানালা। ট্রেনের সিটগুলোও ভাঙা, ভর্তি থাকে ময়লা আবর্জনায়। আবার যাত্রীবাহী ট্রেনের সাথে মালবাহী বগি জোড়া দেওয়া হয়। তখন গাড়ি লাইনচ্যুত হয়। পতিত হয় দুর্ঘটনায়। এরপরও ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ায় এই লাইনে যাত্রীরা ট্রেনে চলাচলে অনেকটা সুবিধাজনক মনে করতেন। শীত মৌসুমে খাজাঞ্চী ও আফজালাবাদ এলাকা থেকে প্রচুর সবজি দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাজারজাত করা হয়। আর সবজি পরিবহন খরচ কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা রেলপথে সিলেট শহরে সবজি বাজারজাত করতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করেন। কিন্ত গত তিন মাস যাবৎ ট্রেন চলাচল না করায় সাধারণ মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কাজী শহিদুর রহমান জানান, নিরাপত্তার কারণে গত ৫ জানুয়ারী থেকে সিলেট-ছাতক লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জিআরপি পুলিশের রিপোর্টের ভিত্তিতে ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগি ‘ইমারজেন্সি সাটল’ এ রাখা হয়েছে।
পূনরায় কবে এই লাইনে ট্রেন চালু হতে পারে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সিলেট-ছাতক সেকশনের দায়িত্বে থাকা মাস্টার নেই। কবে ট্রেন চালু হবে তা তিনি বলতে পারছেন না বলে জানান।