মালুকা বিবির দুর্বিসহ জীবন, ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোন অনুদান
প্রকাশিত হয়েছে : ৯ এপ্রিল ২০১৫, ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ
আব্দুর রহমান সোহেল, রাজনগর ::
মালুকা বিবির বয়স ৯০ বছর। জীবন সায়ান্বে এসে বেঁচে আছেন কোন রকম। দুর্বল শরীর নিয়ে এখন আর চলতে পারেন না। কিন্তু এই বয়সেও ভাগ্যে জোটেনি সরকারের কোনো অনুদান, জোটেনি বয়স্ক ভাতাও।
মালুকা বিবি ‘রাজনগরের বাসিন্দা নন’ উল্লেখ করে তাকে বঞ্চিত করা হয় সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেল মালুকা বিবি রাজনগর সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘড়গাঁও (খারপাড়া) এলাকার বাসিন্দা।
১৯৩২ সালে রাজনগর উপজেলার খারপাড়া গ্রামে জন্ম নেয়া মলুকা বিবির পিতা মৃত ছমেদ মিয়া। স্বামীর বাড়ি জুড়ি উপজেলার লাঠিটিলা এলাকার কচুরগুল গ্রামে। অনেক আগেই স্বামী মারা গেছেন। স্বামীর নাম নিয়ামত উল্লাহ। ১ ছেলে রয়েছে। তার নাম মখলিছ। বিয়ে শাদি করে ঢাকায় থাকে। ছেলের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই। জীবন সায়ান্বে এসেও ছেলের প্রতি তার কোন অভিযোগ নেই। খারপাড়া গ্রামে ভাতিজা মোবারকের ঘরে আশ্রিত হয়ে আছেন। মোবারকের ভাগ্যে যা জোটে তাই দিয়েই তার চলে।
মলুকা বিবি জানান, শেষ বয়সে এসে শরীরে ভর করেছে বিভিন্ন রোগ। সময় মত ডাক্তারও দেখাতে পারি না। ডাক্তারের প্রয়োজন হলে চলে আসি বাজারে। দ্বারে দ্বারে হাত পেতে যা পাই তা দিয়ে কোন ফার্মেসি থেকে ঔষধ নিয়ে যাই।’
তিনি আরো জানান, জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তাঁর ভাগ্যে বয়স্ক ভাতা, ভিজিএফ বা ভিজিডিসহ কোন প্রকারের সরকারি অনুদান পাননি। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুক মিয়ার মাঝে মধ্যে তাকে বিভিন্ন প্রকারের সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু সরকারি বিধবা বা বয়স্ক ভাতার কিছুই জোটেনি তার ভাগ্যে।
ইউপি সদস্য মাসুক মিয়া বলেন, আমি তাকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করি। আমি তাকে আইডি কার্ড দেয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তিনি তা দিতে পারেননি।
রাজনগর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেওয়ান খয়রুল মজীদ সালেক বলেন, তিনি অবশ্যই সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। ওই সময় স্থানীয় ইউপিসদস্যসহ বেশ কয়েকজন বলেছিলেন তিনি আমার এলাকার নন। সে জন্য কোন ব্যবস্থা করা যায়নি।
এব্যাপারে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইনুর আক্তার পান্না বলেন, ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানরা যে তালিকা দেন সেই অনুযায়ীই সরকারি সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়। উনি কি জন্য বাদ পড়লেন বলতে পারছি না। আমি খোঁজ নিচ্ছি।