স্বনামে নিবন্ধন করছে না শিক্ষা বোর্ড
অনিশ্চয়তায় ৬শ’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৮ এপ্রিল ২০১৫, ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ
মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে নিবন্ধন না নেয়ায় সারা দেশ থেকে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ৬শ’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। অথচ ২০শে এপ্রিল জে.এস.সি পরীক্ষার্থীদের নিবন্ধন শেষ হচ্ছে।
আব্দুর রহমান সোহেল, রাজনগর ::
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষা (জে.এস.সি) নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা। মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষা বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে নিবন্ধন না নেয়ায় সারা দেশ থেকে বিপাকে পড়েছেন ৬শ’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, জাতীয় শিক্ষা নীতির আলোকে ‘প্রাথমিক শিক্ষা’অষ্টম শ্রেণী পর্যন্তা করা হলে সরকার ২০১৩ সালে দেশের ৬০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী চালু করে। ওই বিদ্যালয়গুলোর ছাত্রছাত্রীরা ২০১৫ সালে (জে.এস.সি) পরীক্ষায় অংশ নেবে। জে.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য বোর্ডের নিয়ামমতে শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয় ৩৭.০০.০০০০.০৭১.০১.০৩ (অংশ)-২৩৮ স্মারকে গত ৯ মার্চ এক পত্রের আলোকে মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলোকে অনুরোধ জানায়। ওই পত্রের আলাকে বাংলাদেশ শিক্ষা অধিদপ্তর ৫পি/১ বিদ্যা/২০১৪/২৮৪(৮০) স্মারকে গত ২৩শে মার্চ মহাপরিচালক মো. আলমগীর স্বাক্ষরিত একটি পত্র দেয়া হয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড গুলোকে।
ওই পত্রে বলা হয় ‘সহজে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জরুরি-এ- বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকদেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বোর্ডের বিশেষ সহযোগিতা প্রয়োজন।’
মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এমন নির্দেশনা দেয়া হলেও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড বিষয়টি মানছে না।
সিলেট মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ ‘সিশিবো/বিদ্যা/রেজি:/৩৯৪ স্মারকে গত ২৩শে মার্চ বোর্ডের বিদ্যালয় পরির্দশক মো. কবির আহমদ স্বাক্ষরিত একটি পত্র দেয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের। এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত (২০১৫ সনে জে.এস.সি পরীক্ষার্থী) শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বোর্ডের আওতাধীন পার্শ্ববর্তী অনুমতিপ্রাপ্ত/স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করার জন্য বলা হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর দুধরনের বক্তব্য দেয়ায় রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হয়নি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের। ফলে এসব শিক্ষার্থীর জে.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ২০শে এপ্রিল জে.এস.সি পরীক্ষার্থীদের নিবন্ধন শেষ হচ্ছে।
২০১৩ সালে ষষ্ঠ শ্রেণী চালু হওয়া দক্ষিণ ঘড়গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ৮০ জন অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবার জে.এস.সি পরীক্ষা দেবে। সরকারি বিদ্যালয় যেহেতু সয়ংসম্পূর্ণ সেহেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বনামে নিবন্ধন নেয়া বাঞ্ছনীয়। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু সিলেট মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড তা উপেক্ষা করে বলছে অন্য বিদ্যালয়ের নামে সরকারি বিদ্যালয়ের নিবন্ধন করাতে।
এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পঞ্চানন বালা বলেন, আমি বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করি ২-৩ দিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।