আজ সেই ভয়াল গণহত্যার রাত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ মার্চ ২০১৫, ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
আজ ২৫ মার্চ। স্বাধীন বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক জঘন্যতম দিন, ভয়াল কালরাতের দিন। একাত্তরের এই দিনে বাংলার মাটিতে বর্বর পাক সেনাদের হাতে সংঘটিত হয় মানবেতিহাসের নিষ্ঠুরতম নরহত্যা যজ্ঞ।
আলোচনার নামে কালক্ষেপণকারী প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান দিনব্যাপী গোপন তৎপরতায় নরহত্যার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়ে ঐদিনের সূর্যাস্তের সাথে সাথেই কোনরূপ ঘোষণা ছাড়াই চুপিসারে করাচিতে উড়াল দেন।
চট্টগ্রামে এমভি সোয়াত থেকে অস্ত্র খালাসকে কেন্দ্র করে হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে একাত্তরের এই দিনে আওয়ামীলীগ ২৭ মার্চ সারাদেশে সর্বাত্মক হরতাল পালনের ঘোষণা দেয়। দুপুরে বিনা উস্কানীতে সেনাবাহিনী গুলি চালিয়ে ২০ নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ঢাকা থাকা অবস্থায় হত্যাকাণ্ড ও সংকট সমাধানে অহেতুক বিলম্বে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং সময় নষ্ট না করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত ঘোষণার দাবি জানান। গোটা জাতি অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান ছিলো প্রেসিডেন্টের ঘোষণা শোনার জন্য।
কিন্তু সন্ধ্যায় কাউকে কিছু না জানিয়ে সেনাবাহিনীকে নীলনকশা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়ে তিনি সন্তর্পণে এদেশ ত্যাগ করেন। ক’ঘণ্টা যেতে না যেতেই তার নির্দেশ অনুযায়ী সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট রেডিও-টেলিভিশনের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় গোলাগুলি।
রাত ১১টার দিকে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ এর নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হায়েনার হিংস্রতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর, শুরু হয় গণহত্যা। রাজধানীর রাজারবাগ, মিরপুর, পিলখানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে একযোগে চালানো হয় নরহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট।
হানাদার বাহিনী মধ্যযুগীয় কাযদায় বাঙালি নিধনের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজে নামে আজকের এই দিনের শেষে রাতের আঁধারে ঢাকা পরিণত হয় লাশ আর আগুনের নগরীতে।
বাংলার বীর সন্তানেরাও বসে থাকেনি, স্থানে স্থানে গড়ে ওঠে তীব্র প্রতিরোধ। হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতম এই ঘটনা অনিবার্য করে তোলে জাতির জনক কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।