মাধবপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মার্চ ২০১৫, ১২:৫৬ অপরাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
হবিগঞ্জের মাধবপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। নিহত গৃহবধূ জিন্নাত মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী জাফর আলীর মেয়ে।
গতকাল ১৬ মার্চ সোমবার রাতে মাধবপুরের শাহজাহানপুর ইউনিয়নের তেলিয়াপাড়া বেকুইয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় জিন্নাতের শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন দেন তার স্বামী রিপন।
জিন্নাতের মা রেহনা বেগম জানান, এক বছর আগে উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের বেকুইয়া বাজার এলাকার আবদুল নুরের ছেলে রিপন মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় জিন্নাতের। বিয়ের সময়ই তারা বর পক্ষকে নগদ ২৫ হাজার টাকা ও কিছু স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক দেন। বিয়ের পর থেকে জিন্নাতকে তার প্রবাসী বাবার কাছ যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো রিপন। স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে বিভিন্ন সময় জিন্নাত বাবার কাছ থেকে নিয়ে আরও টাকা দিয়েছে। চার দিন আগে জিন্নাত বাবার বাড়ি এসে যৌতুকের জন্য স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনের কথা জানায়। এর পর থেকে সে বাবার বাড়িতে ছিল।
গত সোমবার সকালে রিপন শ্বশুড় বাড়ি আসে। টাকা না নিয়ে গেলে সে জিন্নাতকে তালাক দিবে বলে হুমকি দেয়। জিন্নাতের মা রেহানা বেগম ৫ হাজার টাকা দিয়ে মেয়েকে শ্বশুড় বাড়ি পাঠান। টাকা কম হয়েছে দাবি করে রিপন জিন্নাতকে মারপিট করে এবং তার খাবার বন্ধ করে দেয়। রাতে জিন্নাত না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে তার শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন দেয় রিপন। আগুনে জিন্নাতের গলার নিচের অংশ পুড়ে যায়। এ সময় তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা আসলে রিপন বলে, রান্না করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে গেছে জিন্নাত।
আজ ১৭ মার্চ মঙ্গলবার সকালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে মাধবপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকের সামনে রেখে পালিয়ে যায় রিপন ও তার পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে জিন্নাতের মা ও আত্মীয়রা এসে তাকে ঢাকা নেওয়ার পথে দুপুর ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ মাধবপুর হাসপাতাল থেকে জিন্নাতের লাশ উদ্ধার করে।
মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হিতাংশু শেখর পাল বলেন, দাহ্য পদার্থ ঢেলে জিন্নাতকে পুড়ানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে দাহ্য পদার্থ আসলে কি ধরনের ছিল তা ময়না তদন্ত হলে জানা যাবে।
এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে জানিয়ে মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মনির হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।