চরম উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের ১ উইকেটে জয়
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ
স্পোর্টস ডেস্ক ::
যে ম্যাচটা খুব সহজে জেতার কথা ছিল নিউজিল্যান্ডের, যে ম্যাচটায় সহজ জয়ের পথেই হাঁটছিল নিউজিল্যান্ড, সে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত তাঁরা জিতল মাত্র ১ উইকেটের ব্যবধানে! মিচেল স্টার্ক মাত্র ২৮ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ঠেলে দিলেন খাদের কিনারে। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ব্যাটিং-ঝড় যেখানে জয়ের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিল, সেখানে স্টার্কের বোলিংয়ের সামনে অসহায়ই দেখালো কিউই ব্যাটসম্যানদের। ম্যাককালামের ২৪ বলে ৫০ রানের পাশাপাশি কেন উইলিয়ামসনের অপরাজিত ৪৫ রানের ওপর ভর করেই শেষ পর্যন্ত জয়ের বন্দরে নিউজিল্যান্ড।
বিশ্বকাপের দুই আয়োজকের মধ্যকার এই লড়াই বারুদ ছড়াবে—এমন প্রত্যাশা ছিল প্রায় সবারই। বাস্তবেও কিন্তু লড়াইটা হয়েছে বারুদে ঠাসাই। বিশেষ করে রানের পাহাড় দেখতে দেখতে ক্লান্ত দর্শকদের আজ এই ম্যাচ উপহার দিয়েছে অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্সের এক অনুপম লড়াই।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট। ২৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড দিয়েছিলেন ভেঙে। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে মিচেল স্টার্ক দেখালেন বীরত্ব। তবে তাঁর অসাধারণ বোলিং নিউজিল্যান্ডের মেরুদণ্ড পুরোপুরি ভেঙে দিতে না পারলেও পরাজয়ের আতঙ্কে তাঁদের নীল করতে পেরেছিল। দিল শেষে অবশ্য তাঁর বোলিং-নৈপুণ্য অস্ট্রেলীয় শিবিরকে যে আফসোস আর আক্ষেপেই পুড়িয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ১৫১ রানের জবাবে উদ্বোধনী জুটিতেই ৪০ রান তুলে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড। তাও প্রথম চার ওভারের মধ্যেই। মারকাট ব্যাটিংযের ধারাবাহিকতায় স্কোরবোর্ডে ৮০ রানও উঠে যায় ৮ ওভারের মধ্যেই। মধ্যাহ্ন বিরতির পরপরই দৃশ্যপট পুরোপরিই পাল্টে যায় অকল্যান্ডের ঐতিহাসিক ইডেন পার্ক স্টেডিয়ামে।
মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগেই অকল্যান্ড দেখেছিল ম্যাককালাম-তাণ্ডব। ২৪ বলে তাঁর ৫০ রানের ইনিংসটিতে ছিল ৭টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। মার্টিন গাপটিল অবশ্য আউট হয়েছিলেন ১১ রানেই। কেল উইলিয়ামস খুব ধীরে দলকে এগিয়ে নেন জয়ের দিকে। আর একজনের নাম নিতে হবে—কোরি অ্যান্ডারসন। তাঁর ২৬ রানকে ম্যাচ শেষে বেশ গুরুত্বপূর্ণই দেখাচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ দেখাচ্ছে কারণ, ম্যাককালাম, উইলিয়ামসন ও অ্যান্ডারসন ছাড়া আর কোনো কিউই ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করেননি। স্টার্কের বোলিং তোপের মুখে তাঁরা করেছেন অসহায় আত্মসমর্পণ। উইলিয়ামস শেষ পর্যন্ত বুক চিতিয়ে লড়ে নিউজিল্যান্ডকে এনে দেন আরাধ্য জয়টি। কিন্তু জয়ের আগে কাঠ-খড় কিন্তু কম পোড়াতে হয়নি দলটিকে!
স্টার্কের ৬ উইকেটের মধ্যে পাঁচটিই প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে। তাঁর ৯০ মাইল বেগে বলগুলোকে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের কাছে মনে হচ্ছিল আগুনের গোলা। ওই আগুনের গোলার মাধ্যমেই স্টার্ক একে-একে ফেরান রস টেলর, গ্র্যান্ট এলিয়ট, লুক রঙ্কি, অ্যাডাম মিলনে ও টিম সাউদিকে। শুরুতেই তিনি আঘাত হেনেছিলেন কামিন্সের সহযোগিতায় মার্টিন গাপটিলকে ফিরিয়ে দিয়ে।
উইলিয়ামসন তাঁর ৪৫ রান করেন অবশ্য ৪২ বলে। প্রথম দিকে একটু মার-কাট করলেও শেষ দিকে তিনি নিজেকে গুটিয়ে নেন খোলসের মধ্যে। খোলসের মধ্যে থেকেই মাথা ঠান্ডা রেখে তিনি শেষ পর্যন্ত দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে।