শ্রীলংকার কাছে ৯২ রানে হারল বাংলাদেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ২:০৫ অপরাহ্ণ
স্পোর্টস ডেস্ক ::
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দিবারাত্রির এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে শ্রীলংকার করা ৩৩২ রানের জবাবে ২৪০ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা।
গ্রুপ ‘এ’র ম্যাচটি বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তিলকারত্নে দিলশান ও কুমার সাঙ্গাকারার জোড়া শতকে ৩৩২ রানের বড় সংগ্রহ পায় লংকানরা।
তিলকারত্নে দিলশান ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ১৬১ আর ৪০০তম ম্যাচ খেলতে নামা সাঙ্গাকারা ১০৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। একের পর এক ক্যাচ আর ফিল্ডিং মিসের মহড়ার মধ্যে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র উইকেটটি পান রুবেল হোসেন।
শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের ইনিংসের প্রায় অর্ধেকটাই কাটিয়ে দেন লাহিরু থিরিমান্নে এবং তিলকারত্নে দিলশান। ২৪.৩ ওভারে দুজনেই ফিফটি তুলে দলের স্কোরে যোগ করেন ১২২ রান।
রুবেলে করা পঁচিশতম ওভারে কাট শট খেলতে গিয়ে বাউন্ডারিতে তাসকিনের ক্যাচ হন থিরিমান্নে। ৭৮ বলের ইনিংসে ৩ চারে ৫২ রান করেন এই বাঁহাতি।
প্রথম ২৫ ওভারে ১ উইকেটে ১২২ রান করা শ্রীলংকা পরের ২৫ ওভারে তুলেছে ২১১ রান। উইকেট পতন হয়নি একটিও। প্রথম ওভারেই ক্যাচ মিস করা বাংলাদেশ পরের ২৫ ওভারে হাত ফসকে ফেলেছে আরও অন্তত তিনটি সহজ ক্যাচ।
এরই ফাঁকে নিজেদের ইনিংসের সঙ্গে দলের ইনিংসকে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নেন দিলশান-সাঙ্গাকারা জুটি। ৪৫ বলে ফিফটি ছোঁয়া সাঙ্গাকারা শতক পূর্ণ করেন ৭৩ বলে। বাংলাদেশ-শ্রীলংকা দ্বৈরথে এটি তার পঞ্চম শতক। সঙ্গে আরো ছয়টি অর্ধশতকসহ বাংলাদেশের বিপক্ষে সাঙ্গাকারার রান এখন ১ হাজার ২০৬।
শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলা দিলশান শতক পূর্ণ করেন ১১৫ বলে। পরের ২৮ বলে তুলে নেন আরও পঞ্চাশ। শেষ পর্যন্ত পুরো ৫০ ওভার জুড়ে মাঠে থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরেন ১৪৬ বলে ১৬১ রানের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংস খেলে। ছক্কাবিহীন ইনিংসটিতে চার ছিল ২২টি।
পুরো ইনিংসে লংকান ব্যাটসম্যানরা ছয় মেরেছেন মাত্র একটি। এক ছক্কায় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস গড়ার রেকর্ড অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার, ৩৫৪।
বিরতির পর ৩৩৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় টাইগাররা।
লাসিথ মালিঙ্গার করা প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হয়ে ফিরে যান তামিম ইকবাল। এরপর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শুরু করে টিকতে পারেননি সৌম্য সরকারও। ১৫ বলে ২৫ রান করে সাঙ্গাকারাকে ক্যাচ দেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের বলে।
তারপর ক্রিজে আসেন মমিনুল হক। কিন্তু মাত্র তিন বল খেলে ১ রান করেই সাজঘরে ফেরেন তিনিও। লাকমালের বলে জয়াবর্ধনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে খানিকটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেন এনামুল-মাহমুদুল্লাহ জুটি।
একবার রানআউটের হাত থেকে বেঁচে গেলেও আরেকটি ভুল বোঝাবুঝিতেই রানআউট হন এনামুল হক। ১ চার ১ ছয়ে ৪৩ বলে ২৯ রান আসে এনামুলের ব্যাট থেকে।
মাহমুদুল্লাহ-সাকিবের পঞ্চম উইকেট জুটি টেকে মাত্র ১৬ রান। দলীয় ১০০ রানের মাথায় থিসারা পেরেরার বল স্কয়ার লেগে খেলতে গিয়ে ক্যাচ উঠিয়ে দেন মাহমুদুল্লাহ।
এরপর সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে ৬৪ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। তবে দলীয় ১৬৪ রানে দিলশানকে তুলে মারতে গিয়ে লং অন বাউন্ডারিতে মালিঙ্গার ক্যাচে পরিণত হন সাকিব। তার ৫৯ বলে খেলা ৪৬ রানের ইনিংসে ৪টি চার ও ১টি ছয়ের মার ছিল।
এরপর ৪১তম ওভারে দলীয় ২০৮ রানে মুশফিক আউট হলে বাংলাদেশের সপ্তম উইকেটের পতন হয়। লাকমালের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৩৯ বলে ৩৬ রান করেন তিনি।
৪৪তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ২২৮ রানে মাশরাফিও ফিরে যান সাজঘরে। দিলশানের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরার আগে ৭ রান করেন তিনি।
এরপর মালিঙ্গার করা ৪৭তম ওভারে শেষ দুই বলে সাব্বির (৫৩) ও তাসকিন (০) আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলে ২৪০ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে ৯২ রানের জয় পায় শ্রীলংকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলংকা ৫০ ওভারে ৩৩২/১ (তিলকারত্নে দিলশান ১৬১*, কুমার সাঙ্গাকারা ১০৫*, লাহিরু থিরিমান্নে ৫২; রুবেল ১/৬২, মাশরাফি ০/৫৩, সাকিব ০/৫৫)
বাংলাদেশ ৪৭ ওভারে ২৪০/১০ (সাব্বির রহমান ৫৩, সাকিব আল হাসান ৪৬, মুশফিকুর রহিম ৩৬); মালিঙ্গা ৩/৩৫, লাকমাল ২/৪৯, দিলশান ২/৩৫)
ফলাফল: শ্রীলংকা ৯২ রানে জয়ী।
ম্যান অব দি ম্যাচ: তিলকারত্নে দিশলান।