রাজনগরের উত্তরভাগ চা বাগানে শ্রমিক ধর্মঘট
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ
রাজনগর প্রতিনিধি ::
রাজনগরের উত্তরভাগ চা বাগানের শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করেছে। আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ‘আনলিভ’ ছুটির পাওনা প্রায় ২৫ লাখ টাকা ও হিসাবরক্ষকের অপসারণ দাবিতে শ্রমিকরা কাজে না গিয়ে এ ধর্মঘট পালন করে।
উত্তরভাগ চা বাগানের পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে শ্রমিক মালিক পক্ষের চুক্তি অনুযায়ী চা বাগানের শ্রমিকরা বাৎসরিক ২২ দিন ‘আনলিভ’ ( হাজিরা ও রেশনসহ ছুটি) পাওয়ার কথা। কিন্তু উত্তরভাগ চা বাগানের একাউন্টেন বাগানের প্রায় ১০০০ শ্রমিকদের পূর্বের নিয়মানুযায়ী ৯ দিন করে আনলিভ ছুটি দিয়ে আসছিলেন। গতবছরের ডিসেম্বর মাসে চুক্তির বিষয়টি বাগানের শ্রমিকরা জানতে পারেন। এনিয়ে শ্রমিক নেতারা বাগানের হিসাবরক্ষক অরুন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রথমে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে শ্রমিক নেতারা চুক্তির বিষয়টি দেখালে তিনি তা পরবর্তীতে দেয়ার আশ্বাস দিলেও শ্রমিক নেতারা তাদের ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত আনলিভ ছুটির পাওনা প্রায় ২৫ লাখ টাকা আদায়ের দাবি করেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়। এদিকে চুক্তি অনুযায়ী দু-বছর থেকে বাগানের ৫ জন ‘ম্যানুয়েল স্টাফে’র মাসিক বেতন ২৪৮০ টাকার স্থলে ২২০০ টাকা দেয়ার বিষয়টি সামনে আসায় আবারো তারা আন্দোলন মুখি হয়ে ওঠে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে প্রথমে হিসাবরক্ষক অরুন চন্দ্র রায়ের বাংলো ও পরে অফিস ঘেরাও করে রাখে। এসময় শ্রমিকরা হিসাবরক্ষকের অপসারণ দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। পরে বাগান ম্যানেজারের আশ্বস্তের পর শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়। তবে বাগান কর্তৃপক্ষ বলছে সাবেক ম্যানেজারের সময়ে ওই সময়ের শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মৌখিক আলোচনার ভিত্ততে আনলিভ ছুটি ১০দিন রাখা হয়েছিল। বর্তমানে যেহেতু শ্রমিকরা তা মানছেনা সেহেতু তাদের পাওনা দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
উত্তরভাগ চা বাগানের পঞ্চায়ের কমিটির সভাপতি দুলাল বাগতি ও সম্পাদক দিপক কৈরি জানান, ২০০৬ সাল থেকে সাধারণ শ্রমিকদের প্রাপ্য বাৎসরিক ২২দিন আনলিভ ছুটি দেয়া হচ্ছে না। এতে কর্তৃপক্ষের কাছে শ্রমিকদের প্রায় ২৫ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। আমরা আমাদের পাওনা এবং বাগানের শ্রমিকদের টাকা আটকে রাখার জন্য একাউন্টেন অরুন চন্দ্র রায়ের অপসারনের জন্য কাজ বন্ধ রেখে ধর্মঘট করেছি। তারা বলেন, আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা লাগাতার ধর্মঘট পালন করব।
উত্তরভাগ চা বাগানের ম্যানেজার মো. হুমায়ূন কবির বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। বাগানের সব ডিভিশনের হেডক্লার্কদের বলেছি শ্রমিকদের কী পাওনা রয়েছে তা নিরুপণের জন্য। আনলিভ ছুটির ব্োপারে একান্টেনের কোন হাত নেই। এ বিষয়ে সে দায়ী নয়।